মহিপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর মৎস্যবন্দর মহিপুরে পাউবো ও বনবিভাগের জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরীর হিড়িক পড়েছে। এক সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে এসব স্থাপনা তোলা হয়েছে- এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। মহিপুর থানা ও বনবিভাগের অফিসের সামনে মাত্র ১৫ গজ দূরে এসব অবৈধ ঘর তোলা হলেও সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে নির্বিকার রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, মহিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া-আসার পথের দুই ধার দখল করে এসব অবৈধ ঘরগুলো তোলা হয়। বনের গাছ উজার করে ঘর তোলা হলেও বনবিভাগ দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, ১লা সেপ্টেম্বর (রবিবার) মহিপুরের শাহজাহান মিস্ত্রীর মেয়ে খাদিজা বেগম, ইব্রাহিম কারীর ছেলে নূর জামাল, আঃ বারেক’র ছেলে রিপন, আলম মিস্ত্রীর স্ত্রী (রানার মা) এবং ইউপি সদস্যা বিউটি বেগমসহ ৮জনে এ অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। আরো কয়েকটি ঘর তোলার জন্য পায়তারা চালাচ্ছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
প্রকাশ্যে দিবালোকে বনবিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে এসব ঘর তৈরী করে চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে তৈরী ঘর প্রতি একটি মহল ৩০ হাজার টাকা করে নিয়ে স্থাপনা তৈরীতে সহযোগিতা করেছেন।
অবৈধ ঘর নির্মাণকারী খাদিজা বেগম সাগরকন্যাকে জানান, তারা গরীব মানুষ। থাকার জায়গা নাই। খালি জায়গা পড়ে রয়েছে সেখানে ঘর তুলেছেন তিনি। তিনি ছাড়াও আরো ৭টি ঘর তৈরী করেছে স্থানীয় কয়েকজন। কাউকে কোন টাকা দেয়া হয়নি। আর কেউ বাধাও দেয়নি। খাদিজা বেগম আরো বলেন, শুধু তিনিই নয়, বনবিভাগ ও পাউবো’র জায়গায় পুর্বে আরো কয়েক’শ ঘর তুলেছে স্থানীয়রা।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের মেম্বর মোসা. বিউটি বেগমের কাছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মসজিদের ঝাড়–দার ইব্রাহিমকে একটি ঘর তুলতে সহযোগিতা করেছেন। ওই ঝাড়–দারের কোন থাকার জায়গা নাই, তাই তিনি সহযোগিতা করেছেন। তিনি নিজে কোন ঘর তুলছেন না।
মহিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য নিমাই চন্দ্র দাস বলেন, বিদ্যালয়ে শিশুদের আসা যাওয়ার জন্য টাকা খরচ করে রাস্তা করা হয়েছে। সেই রাস্তার দুই ধার দখল করে অবৈধ ঘর তুলেছে কয়েকজন। এতে বিদ্যালয়ে শিশুদের চলাচলে প্রভাব পড়বে। তবে এ বিষয়ে মহিপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, বনবিভাগের জমিতে কেউ ঘর তোলেনি। যে জায়গায় ঘর তোলা হচ্ছে ওই জমি বনবিভাগের নয়।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মাদ অলিউজ্জামান জানান, তার কাছে ফোনের মাধ্যমে দুইজনে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। তিনি লোক পাঠিয়েছেন নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য- এমনটি দাবি করেছেন।