দেশের কারিগরি শিক্ষা এগিয়ে নিতে বিপুল জনবল নিয়োগের উদ্যোগ
প্রথম পাতা »
প্রযুক্তি »
দেশের কারিগরি শিক্ষা এগিয়ে নিতে বিপুল জনবল নিয়োগের উদ্যোগ
সোমবার ● ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
দক্ষ ও পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে দেশের কারিগরি শিক্ষা। কারণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত অবসরে যাওয়ায় কারিগরি শিক্ষা খাতে ক্রমাগত জনবল কমছে। দেশের সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজগুলোতে (টিএসসি) শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষক ও জনবল অভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকের অভাবে অনেক প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক ক্লাস হচ্ছে না। কিন্তু তারপরও কারিগরিতে ভর্তির হার বাড়াতে অনেক প্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় শিফট খোলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে (টিএসসি) ২৫ হাজার জনবল নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পলিটেকনিকগুলোতে তিন বছরের কারিকুলাম পরিবর্তন করে চার বছর করা হয়েছে। এছাড়া নতুন নতুন বিভাগও চালু করা হয়েছে। কিন্তু যথাযথ জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে জনবল সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বিগত ২০০৬ সালের পর টেকনিক্যাল ক্যাডারের নিয়োগ বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে সরকারি পলিটেকনিকগুলোতে প্রায় ৭ হাজার পদ থাকলেও প্রায় দুই হাজারের মতো পদ শূন্য রয়েছে। অথচ কারিগরি শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটগুলোতে ২০০৪ সাল থেকে প্রথম শিফটের পাশাপাশি দ্বিতীয় শিফটে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। কারিগরি শিক্ষায় ২০০৯ সালে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল দেশের মোট শিক্ষার্থীর আড়াই শতাংশ। পলিটেকনিকগুলোতে আসন বৃদ্ধি করায় এ হার বেড়ে বর্তমানে ১৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সালে তা ২০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালে ৩০ শতাংশে উন্নীত করা। এ কারণে বেসরকারি পলিটেকনিকগুলোতে দ্বিতীয় শিফটের পরিকল্পনা এবং টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজেও ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যদিও অবকাঠামোসহ অন্য সব সক্ষমতা যাচাই না করে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে কোর্স চালুর অনুমতি দেয়া হয়েছে। ফলে এক বছর না যেতেই সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছে।
সূত্র জানায়, উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ ও ল্যাবরেটরিসহ অন্যসব সুবিধা নিশ্চিত না করে টিএসসিগুলোতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং খোলা হয়। ফলে ওসব প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত লেখাপড়া চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এমন অবস্থায় শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ৪৯টি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (এইচএসসি ও ভোকেশনাল কোর্স) এবং ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু রয়েছে। তাছাড়া একটি প্রকল্পের অধীন ১০০ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। ৪৯টি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে দ্বিতীয় শিফট রয়েছে। ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজেও দ্বিতীয় শিফটে এইচএসসি ও ভোকেশনাল কোর্স এবং ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। কিন্তু প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য কর্মরত না থাকায় বাদ পড়ছে। যদিও তাদের অবকাঠামোসহ অন্যসব সমতা যাচাই না করে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে বিভিন্ন কোর্স চালুর অনুমতি দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, কারিগরি শিক্ষা প্রসারে এপ্রিলে এক হাজার ৩৫২টি ক্যাডার পদ এবং ১৭ হাজার ৩০৭টিসহ ১৮ হাজার ৬৫৪টি পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ১০০টি নতুন টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ছয় হাজার ৪০০ নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত হয়। এর বাইরে বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ ৭৮৬টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব পাঠানো হয়। এসব পদ সৃষ্টির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নীতিগত অনুমোদনও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান, কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষক ও জনবল সঙ্কট আছে। এটা নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এফএন/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪০:১৮ ●
৬৩৫ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)