ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
ভারতের আসামে ঘোষিত চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে আমরা মন্তব্য করছি না এবং করতে চাই-ও না। ভারত যদি আমাদের কিছু জিজ্ঞাসা করে তখন আমরা আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাবো।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কারারক্ষীদের ৫৬তম ব্যাচের বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, একাত্তর সালের পরে আমাদের বাংলাদেশ থেকে কোনো লোক ভারতে যায়নি। যারা গিয়েছে তারা আগেই গিয়েছে। ওই দেশ থেকে লোক যেমন এ দেশে এসেছেন, তেমনই আমাদের দেশ থেকেও গিয়েছেন। কাজই এনিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি আসামের অবৈধ নাগরিকদের নিয়ে বাংলাদেশ ‘ভূ-রাজনৈতিক ঘুঁটি’ হতে যাচ্ছে বলেও কারও কারও আশঙ্কা। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কাদের বলেন, দেখুন বাংলাদেশ এখন অর্জনে উন্নয়নে মিশে অনেকেরই ঈর্ষার কারণ। কাজেই অনেকে বাংলাদেশকে নিয়ে সমীহ আছে, অনেকেরই ভূ-রাজনৈতিক বিষয় তো আছেই। জিয়ো-পলিটিক্যাল বিষয় আছে, এটা আগেও ছিল, এখন আরও বেশি হয়েছে। কাজেই এ দেশকে নিয়ে বিভিন্ন দেশের বা যাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় আছে,তাদের চিন্তুা-ভাবনা থাকতেও পারে। আর ভূ-রাজনৈতিক বিষয়টিকে উপেক্ষা করারও কোনো কারণ নেই।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কারাগার ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূণ অঙ্গ। কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শারীরিক উৎকর্ষ ও কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের আন্তরিকতায় রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকার কেরানীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, গরিব ও অসহায় বন্দিদের জন্য কারাগারে বিনাখরচে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে এনজিও-এর মাধ্যমে কারাগারে আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বন্দিদের শ্রমের উৎপাদিত পণ্যের আয়ের অর্ধেক বন্দিকে প্রদান করার কাজ শুরু করা হয়েছে। কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে সরকারের সাফল্যকে আরও উজ্জ্বল করে তুলুন। কারাভ্যন্তর থেকে জঙ্গি ও শীর্ষ সন্ত্রাসীরা যাতে কোনো ধরনের সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী অপতৎপরতা চালাতে না পারে সে বিষয়ে সর্তক থাকবেন।
শৃঙ্খলা ও মানবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করবেন। এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান, কারা মহাপরিদর্শক জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশা, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম ও গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার প্রমুখ।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শিতার জন্য তিনজন প্রশিক্ষণার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে সর্বমোট ৩১৯ জন কারারক্ষী প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন।
এফএন/এমআর