কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পঞ্চম শ্রেণির এক নম্বর রোলধারী শিশু রোকেয়া চাঁদনী। কেবলমাত্র শেষ হওয়া মডেল টেস্ট পরীক্ষায় সে ইংরেজিতে মার্কস পেয়েছে ৪৫। সঙ্গত কারণেই ক্লাশ ফাইভের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রী। সে তার লেখার একটি খাতার ৪৫ পাতা ব্যবহার করেছে এক মাস সময়ে। দু’এক পাতা নষ্টও করেছে। এটি ছিল এ স্কুলটির লেখাপড়ার একটি উদাহরণ মাত্র।
পৌর শহরের কলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী চাঁদনী। কেউ কেউ বড় সিকদার বাড়ির স্কুল বলেন। অথচ মাত্র পৌনে এক কিলোমিটার দুরের মঙ্গলসুখ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চমের রোল নম্বর একধারী শিক্ষার্থী চন্দিমা মিত্র একই মডেল টেস্টে ইংরেজীতে পেয়েছে ৯৮। এক শ’ মার্কসের পরীক্ষায় গড়ে ছয় বিষয়ে ৯৮-৯৯ মার্কস পেয়েছে এ শিক্ষার্থী। এ দু’টি স্কুলের পথের দুরত্ব মাত্র ১০মিনিটের পথ। অথচ শিক্ষার দুরত্ব যোজন যোজন পথ। যেন কোন হিসেব মিলছেনা।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) স্কুলটিতে গিয়ে দেখা যায় পঞ্চমে উপস্থিত রয়েছে ১৪ জন। চতুর্থ শ্রেণির ১৩ জন, তৃতীয় শ্রেণির ১৯ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির ১৭ জন, প্রথম শ্রেণির ১০ জন। শিশু শ্রেণিতে ভর্তি রয়েছে আরও ১৯ শিশু। প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানালেন, ভর্তির হিসেবে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত তার শিক্ষার্থী সংখ্যা ৯৩ জন। শিশু শ্রেণিতে রয়েছে আরও ১৯ জন। মোট ১১২ জন। স্কুলটিতে শিক্ষক পদায়ন রয়েছে সাত জন। যেখানে থাকার কথা সর্বোচ্চ চার জন। মডেল সরকারি স্কুল বাদে কলাপাড়ায় একেকটি স্কুলে সর্বনি¤œ চার জন শিক্ষক পদায়ন করার নিয়ম রয়েছে। শিক্ষার্থীও সংখ্যা বেশি হলে প্রতি ৪০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক থাকার কথা। এই স্কুলে তিন জন শিক্ষক বাড়তি রয়েছে তিনজন। তা সত্ত্বেও লেখাপড়ার বেহাল দশা। যেখানে একই শহরের মঙ্গলসুখের পঞ্চমের অধিকাংশ শিশুরা গড়ে ৯০ থেকে ৯৮ পর্যন্ত মার্কস পায়, আর সেখানে ওই স্কুলের শিশুরা পাচ্ছে গড়ে সাব্জেক্ট প্রতি ৪৫-৫০ মার্কস। আবার অধিকাংশ শিশু ফলাফল পর্যন্ত বলতে পারছে না। অভিভাবকদের প্রশ্ন ? কলাপাড়া সরকারি প্রাইমারি স্কুল থেকে মঙ্গলসুখ স্কুলের দুরত্ব মাত্র সর্বোচ্চ পৌনে এক কিলোমিটার হতে পারে। কিন্তু এই স্কুলের সঙ্গে মঙ্গলসুখের শিশুদের লেখাপড়ার দুরত্ব যোজন যোজন। এরও বেশি হতে পারে বলেও বলছেন কেউ কেউ। অধিকাংশের প্রশ্ন এখান থেকে মঙ্গলসুখের লেখাপড়ার দুরত্ব কতো।
এমইউএম/এমআর