ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
বিদেশ থেকে অর্থ ধার করে নয়, সরকার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিয়েই উড়োজাহাজ কিনবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আগে আমরা বিমান কিনতে বিদেশ থেকে টাকা ধার করতাম। এখন আমরা আমাদের ব্যাংক থেকেই নিজেরা লোন দিয়ে বিমান কিনব, যেন অন্য কোথাও থেকে ধার না নিতে হয়। নিজের টাকাতেই বিমান কিনব, সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমরা আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে চাই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তৃতীয় ড্রিমলাইনার ‘গাঙচিল’ উদ্বোধন করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ বিমানের যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান। ‘গাঙচিল’ বাংলাদেশ বিমানের বহরে যুক্ত হওয়া তৃতীয় ড্রিমলাইনার। এর আগে ‘আকাশবীণা’ ও ‘হংসবলাকা’ নামে আরও দুইটি ড্রিমলাইনার বোয়িং যুক্ত হয় বাংলাদেশ বিমানে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির তৃতীয় প্রজন্মের বোয়িং ৭৮৭-৮ মডেলের ‘গাঙচিল’ যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বিমান বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫টি। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিমান পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের আন্তরিকতা নিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আপনারা বিমানের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। কারণ আজ দেশ যদি উন্নত হয়, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়, দেশের অগ্রযাত্রা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে সব পরিবারের সবাই সুন্দর জীবনযাপন পাবে, সুখী হয়ে চলতে পারবে। আমাদের লক্ষ্যও সেটাই।’ আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যও তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের জীবনও সুন্দরভাবে গড়ে তোলাÑ বলেন তিনি।
আগের সরকারের আমলে বাংলাদেশ বিমানের কোনো উন্নতি হয়নিÑ এমন অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তাদের সময় দেশের উন্নতি হয়নি। এই ১০ বছরের মধ্যে আজ আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একটি উন্নত স্থানে নিতে সক্ষম হয়েছি। বিমানও তার মধ্যে একটি। এই বিমান আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার একটি প্রতীক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যখন বিমান যায়, মানুষ বাংলাদেশকে চেনে। বিমানের মধ্য দিয়ে অন্য দেশের মানুষ বাংলাদেশকে চিনবে, জানবে, সম্মান করবে।
তিনি বলেন, এই দিকটিতে লক্ষ্য রেখেই বিমানকে আরও উন্নত করতে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছি। আমি প্রথমবার যখন প্রধানমন্ত্রী হই, সিলেট ও চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করে দিয়েছিলাম। শুধু তাই নয়, ১৯৯৬ সালের আগের বিমানবন্দরগুলোর ছবিগুলো দেখবেন, আর এখনকার ছবি দেখবেন। তখন কোনো বোর্ডিং ব্রিজ বা কোনো আধুনিক ব্যবস্থাই ছিল না। বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিংয়ের জন্যই সেখানে দেশের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির উদ্যোগ সরকার নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে এখন যেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আকাশপথে যাতায়াত সুবিধা রয়েছে, তার বাইরের দেশগুলোতেও যেন বাংলাদেশ থেকে উড়োজাহাজ যেতে পারে, সে ব্যবস্থা সরকার করছে বলে জানান তিনি। বেসমারিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিমানের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল এনামুল বারী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক। অনুষ্ঠানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারও উপস্থিত ছিলেন।
এফএন/এমআর