আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী পৌরসভার একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোসাঃ আসমা বেগম ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুরবণ করেছেন। ঘটনা ঘটেছে সোমবার দিবাগত রাতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের জরুরী বিভাগে।
পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, শিক্ষিকা আসমা বেগমের বড় মেয়ে লুবা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ঢাকা ইউসিসি কোচিং সেন্টারে কোচিং করছে। ৮ আগষ্ট ওই মেয়ের কাছে যান মা আসমা আক্তার ও স্বামী স্বপন তালুকদার। মেয়ের কাছে আট দিন থেকে শনিবার গ্রামের বাড়ী আমতলীতে আসেন শিক্ষিকা আসমা এবং বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন তিনি। ওই দিন রাতে তার শরীরে জ্বর হয়। রবিবার সকালে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা করান সে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মোঃ শাহাদাত হোসেন তাকে ডেঙ্গু শনাক্ত করন এনএস-১ পরীক্ষা দেন। ওই হাসপাতালেই তিনি পরীক্ষা করেন। এনএস-১ পরীক্ষায় তার শরীরে ডেঙ্গু জ্বর ধরা পরে। ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। একদিন চিকিৎসা শেষে সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেন। তাকে দ্রুত বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের গেটেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান স্বজনরা। পরে তাকে ওই হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যূ ঘোষনা করেন।
শিক্ষিকার স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে। তারা আরো বলেন, রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে ওই হাসাপাতালের চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে বরিশাল প্রেরণ করেছেন। শিক্ষিকা আসমা বেগমের মৃত্যুতে তার কর্মস্থল আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিক্ষাঙ্গন ও তার পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মাকে হারিয়ে দিশেহারা শিক্ষিকার দুই মেয়ে লুবা ও সরকারী একে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেনীতে পড়–য়া দিবা। দুই মেয়ে ও স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
শিক্ষিকা আসমা বেগমের বোন নাসিমা বেগম বলেন, ঢাকায় মেয়ে লুবার কাছ থেকে শনিবার বাড়ীতে আসেন। ওইদিন রাতে শরীরে জ্বর হয়। রবিবার তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ডেঙ্গু শনাক্ত করন পরীক্ষা দেন। ওই হাসপাতালে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু জ্বর ধরা পরে। ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই।
শিক্ষিকা আসমা বেগমের দেবর টুকু তালুকদার কান্নাজনিত কন্ঠে বিলাপ করে বলেন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের ভুলের কারনে আমার ভাবির মৃত্যু হয়েছে। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন।
আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক মোঃ মাইনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষিকা আসমা বেগমের মৃত্যুতে বিদ্যালয়ের অপুরনীয় ক্ষতি হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, একজন আদর্শ শিক্ষিকা ছিলেন তিনি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, শিক্ষিকা আসমা বেগমের এনএস-১ পরীক্ষায় ডেঙ্গু জ্বর ধরা পরেছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডাঃ মোঃ সাইদুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
এমএইচকে/এমআর