সাগরকন্যা রিপোর্ট॥
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর কথা বলে ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্রয়কৃত দুটি কোরাল মাছ জোরপূর্বক মাছের আড়ৎ থেকে নিয়ে গেছেন কুয়াকাটা পৌরসভার আলোচিত মেয়র আঃ বারেক মোল্লা। তিনি আবার কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি। ঘটনাটি কুয়াকাটায় টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন মেয়র ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোঃ শাহআলম অভিযোগে জানান, আগামী ১লা ফেব্রুয়ারি তার ভাতিজির বিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য গত ১৫/২০দিন ধরে বড় মাপের দুইটি কোরাল মাছ খুঁজছিলেন। এক পর্যায়ে ৩/৪দিন আগে ১০কেজি ৩০০গ্রাম এবং ৬কেজি ১০০গ্রামের দুইটি কোরাল মাছ প্রায় ২২হাজার টাকায় ক্রয় করে কুয়াকাটায় মাছের আড়ৎদার বশিরের ফ্রিজে রেখে দেন। শনিবার বিকালে সেই মাছ বাড়ীতে পাঠানোর কথা ছিল।
তিনি জানান, হঠাৎ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাছের আড়ৎদার বশির ফোন দিয়ে জানায় যে, তার ফ্রিজে রাখা ওই কোরাল মাছ দুটি কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র বারেক মোল্লা নিয়ে যেতে এসেছেন। তখন তিনি মসজিদে জুম্মার নামাজের জন্য উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে বশিরের ওই ফোন থেকেই পুলিশ সদস্য শাহআলম মেয়রের সাথে কথা বলেন। এসময় শাহআলম মেয়রকে সবকিছু খুলে বলেন। এক পর্যায়ে মেয়র তাকে বলেন, ‘এই মাছ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠাতে হবে। আমি কুয়াকাটার মেয়র, আমি এত বড় মাছ পাইনা- আর তোমরা পুলিশ হইয়া এত বড় মাছ এখান থেকে নিবা?
পুলিশ সদস্য শাহআলম আড়ৎদার বশিরের বরাদ দিয়ে আরো জানান, ওই সব কথা বলে জোর করে তার লোকজন নিয়ে ফ্রিজ থেকে ওই কোরাল মাছ দুটি নিয়ে নেয়।
তাৎক্ষনিক বিষয়টি মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সাইদুর রহমান এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম সাহেবকে তিনি অবহিত করেছেন।
জানতে চাইলে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক। সামান্য মাছ, তাও পুলিশের ক্রয়করা সেই মাছও যদি রক্ষা না পায়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এক সংবাদকর্মী কুয়াকাটা পৌর মেয়রকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘কোরাল মাছ দুটি কেনা হয়েছে, তবে সেটা কাদের তা আমি জানিনা, একটু খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাচ্ছি।’ এই বলে প্রথমে ফোন কেটে দেয় কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুর বারেক মোল্লা।
‘কিছুক্ষণ পর আবার তাকে ফোন দেয়া হলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করে বলেন, আপনি আসেন দুই ভাই মিলে দেখি কে কার মাছ নিছে। মাছ নিলে সেটার ব্যবস্থা করা যাবে।’ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নামে জোরকরে মাছ নিছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি সেরকম লোক, আপনি জানেন না। এগুলো মিথ্যা কথা।’
জানতে চাইলে মাছের আড়ৎদার বশির জানান, ‘শাহআলম স্যারের দুটি কোরাল মাছ আমি ম্যানেজ করে দিচ্ছি। তার মাছ পাইলেইতো হয়।’ শুক্রবার পৌরসভার মেয়র আপনার দোকান থেকে কোরাল মাছ নিয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বশির বলেন, ‘মেয়র সাহেবতো প্রায়ই মাছ নেয়, শুক্রবারও কোরাল মাছ নিছে।’ সেই মাছ শাহআলমের ক্রয় করা মাছ কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাই এসব বাদ দেন এখন। শাহআলম স্যারের মাছের ব্যবস্থা করতেছি।’