ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছে জ্বালানি বিভাগের পাঁচ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। একই সঙ্গে, বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোকে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি কল সেন্টার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান প্রতিমন্ত্রী। নসরুল হামিদ বলেন, আমরা মধ্যাঞ্চলে যেভাবে গ্যাস বিতরণ করেছি, চিন্তা করছি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কীভাবে গ্যাস দেওয়া যায়। অর্থাৎ, খুলনা ও যশোর অঞ্চলে। এছাড়া, উত্তরের দিকেও গ্যাস নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর বিবরণী চাওয়া হয়েছে। এটা প্রকাশ করা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিতাসের আয়কর বিবরণী চেয়েছি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য। আমরা এটা প্রকাশ করতে পারবো না। সেটা আয়কর বিভাগ থেকে নেওয়া বেটার (উত্তম) হবে। কারণ, এটা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য।
নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানেও একটা সম্ভাবনা দেখা গেছে। আমরা নতুন নতুন টেকনোলজি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ভোলাতে গ্যাসের একটা বড় সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। ভোলার গ্যাসকে আমরা আরও বড় ভাবে কীভাবে ব্যবহার করতে পারি, সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। আমরা সেটাকে দক্ষিণ দিকে গ্যাসলাইন নির্মাণ করে কীভাবে পটুয়াখালী পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারি, সেটার সম্ভাবনাও যাচাই-বাছাই চলছে।
তিনি বলেন, খুলনায় ইকোনমিক জোন হচ্ছে। খুলনা, যশোর, বরিশাল, পটুয়াখালী- এ অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। সেখানে জ্বালানি নিরাপত্তা তৈরি করতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে গ্যাস আনা লাভজনক কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, আমরা ভারত থেকে বিদ্যুৎ নিচ্ছি, জ্বালানি খাতের সম্ভাবনা দেখছি। আমরা জ্বালানিকে সিকিউরড করছি। যাতে পিছিয়ে না থাকি, পিছিয়ে থাকা মানে এক্সপেনসিভ। এজন্য আশপাশের দেশগুলোকে আমরা ইনক্লুড করছি। নসরুল হামদি বলেন, যেভাবে আমাদের সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হচ্ছে, সারাবিশ্বে এনার্জি ট্রানজিশন হচ্ছে, সেই ট্রানজিশনের কারণে আমরা কোন জায়গায় আছি। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্র বাছাই করে নিয়েছি, আমরা কয়লা, লিকুইড ফুয়েল, এলএনজি, নিজেদের ন্যাচারাল গ্যাস নিয়েছি। জ্বালানি হিসেবে রিনিউয়্যাবল এনার্জিকেও আমরা সঙ্গে নিয়েছি। নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশা করছি, জ্বালানি ক্ষেত্রে আগামি ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে একটা ভালো জায়গায় হবে। জ্বালানি ক্ষেত্রে সাশ্রয়ীটা সবচেয়ে বড় জায়গা তৈরি করছে। পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো আমরা নিচ্ছি এবং আরও এফিশিয়েন্টলি কীভাবে গ্যাস ব্যবহার করতে পারি তা দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গ্যাসে যে যানবাহন চলে আমরা দেখেছি সেটার এফিশিয়েন্সি মাত্র ১৭ থেকে ২১ শতাংশ। সেই গ্যাস দিয়ে যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, সেই বিদ্যুৎ দিয়ে যানবাহন চালাই সেটার এফিশিয়েন্সি ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ। এখানেও কিন্তু ভবিষ্যতে একটা ট্রানজিশন হবে হয়তো। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, বিদ্যুৎচালিত যানবাহনগুলোকে আরও সহজতর করা যায় কিনা। এগুলো অনেক কিছু এক্সপেরিমেন্ট চলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন পরিবেশকে সঙ্গে রেখে সবকিছু করতে হবে। সুতরাং আমাদের কোনো নতুন টেকনোলজি থাকি সেটা যদি পরিবেশকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা যায় তাহলেই কেবল আমরা কয়লা উত্তোলনে যাবো।
এফএন/এমআর