আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আগামী ১২ আগষ্ট পবিত্র ঈদুল আজহা। আর মাত্র ৬ দিন বাকী। শেষ মুহুর্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খামারিরা। বাজারে পশুর দাম কম থাকায় হতাশ তারা। চাহিদার তুলনায় আমতলীতে পশু উৎপাদন বেশী থাকায় বাজারে কমে গেছে এমনটাই জানান গরু ব্যবসায়ীরা। লোকসানের ভয়ে খামারীরা পশু বিক্রি করছেন না। এতে দুচিন্তায় তারা। খামারীদের ধারনা অনেক গরু এ বছর অবিক্রিত থেকে যাবে।
আমতলী প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় কোরবানীর জন্য ৪ হাজার ৮’শ ৮০ টি পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে এ উপজেলার ৫ হাজার ২’শ ০৬ টি পশু আছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৬’শ ৪২ টি গরু, ৮৪ টি মহিষ,৩ হাজার ৪’শ৭০ টি ছাগল ও ১০ টি ভেড়া। চাহিদার তুলনায় ৩’শ২৬ টি পশু বেশী রয়েছে। প্রতিদিন এ পশুগুলোকে খৈল, ভুসি,কুড়া ও কাচা ঘাস খাওয়াচ্ছেন খামারীরা। শেষ সময়ে ভালো লাভের আশায় খামারিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। খুব যতœ সহকারে পশুর দেখভাল করছেন তারা। কিন্তু চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশী থাকায় বাজারে পশুর দাম কমে গেছে। ফলে লোকসান গুনতে হবে খামারীদের এমনটাই জানান খামার মালিক ও ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান হাওলাদার। অনেক খামারী বাজারের অবস্থা দেখে লোকসানে গরু বিক্রি না করে পরবর্তী বছরের জন্য রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দক্ষিণাঞ্চলের বড় গরুর হাট আমতলী, গাজীপুর বন্দর, চুনাখালী বাজাওে খোজ নিয়ে জানাগেছে,দেশীয় গরুতে বাজার সয়লাব। বাজারে ক্রেতা কম। গরু প্রতি গত বাজারের তুলনায় এ বাজারে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা কমে গেছে।
ক্রেতা বাকি বিল্লাহ বলেন, বাজারে গরুর দাম গত বছরের তুলনায় কম। একটি মাঝারি সাইজের দেশী গরু ৪৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। গত বছর এ গরুর দাম ছিল ৫৫/৬০ হাজার টাকা।
আমতলী গাজীপুর বন্দরের গরু ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান হাওলাদার বলেন, কোরবানী উপলক্ষে ৩০টি গরু ১৭ লক্ষ টাকায় ক্রয় করেছিলাম তা থেকে ১৭ গরু টি ৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। বাজারে গরুর দাম কম থাকায় বাকী ১৩ টি গরু দুচিন্তায় আছি। বর্তমান অবস্থায় বাজার থাকলে লোকসান গুনতে হবে।
ব্যবসায়ী মনির দর্জি, হালিম প্যাদা বলেন, চাহিদার তুলনায় বাজারে অনেক গরু বেশী আসায় দাম কমে গেছে।
আমতলী গরু হাটের ইজারাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, এলাকার পশুতে কোরবানীর চাহিদা পূরন হচ্ছে। পশুর দাম সহনশীল অবস্থায় রয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, কোরবানী উপলক্ষে পশুর বাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। যাতে মানুষ নির্বিঘেœ পশু ক্রয়-বিক্রয় করে গন্তব্যে পৌছতে কোন সমস্যা না হয়। তিনি আরো বলেন, জাল টাকা সনাক্তকরন মেশিনসহ সাদা পোশাকে পুলিশ বাজারে কাজ করছে।
আমতলী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, আমতলীতে চাহিদার তুলনায় কোরবানীর পশুর উৎপাদন বেশী। তিনি আরো বলেন কৃত্রিমভাবে পশু মোটাতাজাকরন এবং রোগাক্রান্ত পশু যাতে বিক্রি না হয় সে বিষয়ে মেডিকেল টিম সদা প্রস্তুত রয়েছে।
এমএইচকে/এমআর