ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিডিয়া গুরুত্ব দেওয়ায় মানুষ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পারছে। না হলে এই সরকার গুজব বলে উড়িয়ে দিত। আসলে মন্ত্রী ও মেয়রদের কোনও লজ্জা-শরম নেই। যেটাকে এক কথায় বলা যায় বেহায়া। এরা যেহেতু জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাই এদের উদ্দেশ্য থাকে জনগণের টাকা লুট করার।
সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বেচ্ছাসেবক দল এ কর্মসূচির আয়োজন করে। মিডিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, মিডিয়া অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ডেঙ্গু সমস্যাকে সারা জাতিসহ বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে। না হলে সরকার যা শুরু করেছিল, তারাতো গুজব বলেই উড়িয়ে দিত। মিডিয়া এটাকে সামনে নিয়ে এসে এখন পর্যন্ত যে ভূমিকা পালন করছে, সেটা দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য প্রসংশিত।
তিনি বলেন, আজকের (গতকাল সোমবার) পত্রিকায়ও আছে, গতকাল (গত রোববার) ১৭৬০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শুধু ঢাকায়। আর এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজারের ওপরে। অথচ মন্ত্রী যিনি দায়িত্বে আছেন, এমনকি মেয়র সাহেবরা কী বলেছেন, সেটা রিপিট করতে চাই না। আসলে এদের কোনো লজ্জা নেই। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই তাদের জবাবদিহিতা নেই। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে যেকোনো প্রকারে ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং জনগণের অর্থকে লুণ্ঠন করা। সংসদ তো এখন কিছুই নেই। ওখানে তথাকথিত তাদের পছন্দমতো একটা বিরোধী দল দাঁড় করিয়ে রেখেছে। এই সরকার একেবারেই গণবিরোধী। জনগণের স্বার্থবিরোধী সরকার। মানুষের নূন্যতম অধিকার লুণ্ঠনকারী সরকার।
আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের সুরক্ষার জন্য ব্যাপক দুর্নীতি করছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, আমার এমন একটা রাষ্ট্রে বসবাস করছি, যেখানে জীবনের কোনও নিরাপত্তা নেই। কিন্তু সরকার নিজেদের সুরক্ষার জন্য ব্যাপক দুর্নীতি করছে। সেই দুর্নীতির টাকা দিয়ে দেশের বাইরে বাড়িঘর করছে। সেখানে থাকার ব্যবস্থা করছে। এটাই হলো বাস্তবতা। ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে জেনেভায় মানবাধিকারের ওপরে নির্যাতনবিরোধী গুরুত্বপূর্ণ একটি কনভেনশন হয়েছে। বর্তমান সরকার ১০ থেকে ১২ বছর ধরে ক্ষমতায়, কিন্তু সেখানে কোনো জবাবদিহিতা করেনি। কনভেনশনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটি বাংলাদেশকে ডেকে এ দেশে যে নির্যাতন হয়, সে সম্পর্কে সরকারের বক্তব্য কী জানতে চেয়েছিল। সেখানে আমাদের আইনমন্ত্রী অবলীলায় মিথ্যা কথা বলেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে কোনো গুম-খুনের ঘটনা তার জানা নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখছি একজন সিনিয়র সাংবাদিক মুশফিকুর রহমান গুম হয়ে গেছেন। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের এমপি ছিলেন ইলিয়াস আলী। চৌধুরী আলম কমিশনার ছিলেন। তাদের এখন পর্যন্ত খুঁজে পাইনি। আমাদের ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, বিএনপির প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছেন। তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা এমন দেশে বাস করছি, যেখানে আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। সরকার নিজেদের সুরক্ষার জন্য দুর্নীতি করছে এবং দুর্নীতির টাকা দিয়ে বিদেশে বাড়ি বানাচ্ছে। যেখানে তারা বসবাসের জন্য ব্যবস্থা করছে। এসময় সময় উপযোগী কর্মসূচি নেওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি দেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপিসহ সব অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের আহবান জানান। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী প্রমুখ।
এফএন/এমআর