আমরা কারও অমঙ্গল কামনা করি না: গয়েশ্বর

প্রথম পাতা » রাজনীতি » আমরা কারও অমঙ্গল কামনা করি না: গয়েশ্বর
শনিবার ● ৩ আগস্ট ২০১৯


আমরা কারও অমঙ্গল কামনা করি না: গয়েশ্বর

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গিয়েছেন। আমরা চাই, আল্লাহ তার চোখ ভালো করুক। আল্লাহ তার চোখ, শরীর ও ভাবনাটা সুস্থ করুক। কারণ, আমরা কোনও মানুষের অমঙ্গল কামনা করি না।

শনিবার (৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলন আয়োজিত ‘মানবাধিকার ও আইনের শাসনের চরম অবনতি: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা করেন। গয়েশ্বর বলেন, এই সরকার খুব ভালো অবস্থায় নেই। এটা মন্ত্রীদের কথা-বার্তায় মনে হয়। আর প্রধানমন্ত্রী ছাড়া তো কেউ কথাও বলেন না। চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেছেন। দেশের অবস্থা যত খারাপ, তার চেয়ে মনে হয়, প্রধানমন্ত্রীর অবস্থা ভয়াবহ। তা না হলে তিনি তাড়াতাড়ি দেশে আসতেও পারতেন। তিনি যখন আসতে পারছেন না। দেশের মানুষ বন্যায় ভাসতেছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। মনে হচ্ছে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কঠিন অবস্থায় আছেন। তার অবস্থাটাকে পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত না করে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতা কামনা করে বিএনপি নেতা বলেন, উনার চোখটা সুস্থ করুক, মনটা সুস্থ করুক, ভাবনাটাকেও সুস্থ করুক। আমরা মানুষের অমঙ্গল কামনা করি না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, রাজনৈতিক নেত্রীর মুক্তি হয় রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের নেত্রী জেলখানার যাওয়ার পরে আমরা কোনও আন্দোলন করতে পারি নাই। যে সরকার তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হবে। আর আন্দোলনে কোনও আওয়াজও আমরা আদালতে দিতে পারিনি। তিনি বলেন, গণপিটুনির আড়ালে অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে কিনা সে বিষয়টি আনতে হবে। সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, এর সঙ্গে বিরোধী দলের হাত আছে। তার মানে কী? তার মানে, দেশকে চরম একটা অবস্থানের মধ্যে ফেলে দেওয়া এবং কোনও একটা সময়ে তারা নিজেরাই দেশ ছেড়ে কেটে পড়ে কিনা সেটিও দেখবার বিষয়। এসময় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশর দুর্নীতির আড্ডাখানা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়নহীনতার সমালোচনা করে ডেঙ্গু মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার উপর জোর দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, এডিস মশা আওয়ামী লীগকেও চিনে না, বিএনপিও চিনে না, সরকারি দল চিনে না, ডাক্তারও চিনে না, ইঞ্জিনিয়ারও চিনে না, ধনীও চিনে না, গবিবও চিনে না। এদের সুযোগ দিলে সুযোগটা পায়। এই ডেঙ্গু সমস্যার সমাধান মিলে-মিশে করতে হবে, সম্মিলিতভাবে করতে হবে। এই প্রসঙ্গে গয়েশ্বর ডেঙ্গুর সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের তুলনাও করেন।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু বনাম খুন-গুম-নারী নির্যাতন। এই দুইটা যদি প্রতিযোগিতা হয়, দেখা যাবে ডেঙ্গু এখনও শিরোপা অর্জন করে নাই। ডেঙ্গুতে এই পর্যন্ত যতজন মারা গেছে, তার চেয়ে গুম-খুন-নারী নির্যাতনে লাশের মিছিল অনেক বড়। তাহলে ডেঙ্গুর চেয়ে ভয়াবহ কে? এই সরকার। তারা ডেঙ্গুর চেয়েও ভয়ানক। গয়েশ্বর রায় বলেন, দুইটা সিটি করপোরেশন আছে। মানুষ রসিকতা করে বলে সিটি করাপশন। অর্থাৎ এই সিটি ভবন মানে এখানে করাপশনের আড্ডাখানার আওতায়। সব এলোমেলো। প্রতি বছর কিন্তু মশা মারার নির্ধারিত বাজেট আছে। ডেঙ্গুর বাইরে কিন্তু সাধারণ মশা আছে। এই সাধারণ মশা মারার একটা প্রকল্প আছে, তাদের সুনির্দিষ্ট বিভাগ, কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে। প্রতি বছর ওষুধ বা ভেজাল যেটাই বলুন কেনা হয়। এগুলো কী হয়? এগুলো যা হবার যথারীতি তাই নয়। এগুলো ভাগাভাগি হয়। সিটি করপোরেশন মশা মারার কাজটি সঠিকভাবে করলে ডেঙ্গুর সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করত না বলে মনে করেন গয়েশ্বর।
গয়েশ্বর রায় বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। একজনের কথাই সব চলে। মারা গেছে, ঘোষণা দিতে ওঁর অনুমতি লাগবে। মারা গেছে ১৪ দিন আগে, ১৪ দিন লাইভ সাপোর্টে। কারণ ওঁর নির্দেশ পাওয়া যাচ্ছে না। আবার উনি ঠিক করবেন, কোন পার্টিতে কে প্রেসিডেন্ট হবেন, কে সংসদের বিরোধী দলের নেত্রী হবেন। সব পার্টি উনি চালাবেন। ওঁর জোটে ১৪টা দল আছে। আমি বলব, প্রধানমন্ত্রী সবই করবেন, সবই পারেন। আরেকটা কাজ করে দেন, একটা আইন করে দেন। আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী পদাধিকার বলে সব দলের আপনি সভাপতি এবং আপনার কথামতো আমাদেরকে চলতে হবে। তাহলে পরিষ্কার বলতে পারব, সরাসরি আপনার কথায় চলি, তীর্যক সুর গয়েশ্বরের।
সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও খন্দকার মো. মহিউদ্দিন মাহির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ-হিল মাসুদ, মিয়া মো. আনোয়ার, আসম মোস্তফা কামাল, নাদিয়া পাঠান বক্তব্য রাখেন।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৫:০৭ ● ৩১২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ