কলাপাড়ায় মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউট’র বেহাল দশা

প্রথম পাতা » সর্বশেষ » কলাপাড়ায় মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউট’র বেহাল দশা
বৃহস্পতিবার ● ১ আগস্ট ২০১৯


কলাপাড়ায় মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউট’র বেহাল দশা

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউটে প্রয়োজনীয় জনবল আর উপকরনের অভাবে ভেঙ্গে পড়েছে এর কার্যক্রম গবেষনা প্রতিষ্টন হলেও এখানে নেই কোনো গবেষনা কার্যক্রম।
উপকুলীয় মৎস্য ভান্ডার রক্ষা এবং নতুন নতুন মাছের জাত উদ্ভাবনের জন্য এ প্রতিষ্ঠানটি নির্মান করা হলে ও আজ পর্যন্ত কোনো নতুন জাতের মাছ উদ্ভাবন করতে পারেনি এ প্রতিষ্টানটি। শুধু অফিসে বসে কর্মকর্তারা অলস সময় কাটান আর মাস শেষে সরকারি বেতন Ñভাতা উওোলন করে কাটিয়ে দেন বছরের পর বছর। এ প্রতিষ্টান থেকে আজ পর্যন্ত উপকুলের মৎস্য চাষীরা কোন সুফল ভোগ করতে পারেননি বলে অভিযোগ হাজার হাজার মৎস্য চাষীদের।
মৎস্য গবেষনা ইনিষ্টিটিউট সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার পৌরশহরে বাদুলতলী মৌজার সাড়ে ৪ একর জমি উপর প্রতিষ্টিত বিএফডিসি এর উদ্যোগে উপকুলের জেলেদের আহরিত মৎস্য রপ্তানি করার জন্য ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ডেনমার্ক সরকারে অর্থায়নে ১৯৭৯ সালে এটি নির্মান করা হয়। শুরুতে এখানে মৎস্য অবতরন কেন্দ্র, মৎস্য ক্রয়, হিমাগার, মাছ ধরার জন্য ১৩টি নৌযান, বরফ উৎপাদন কল, ১ টি ওয়ার্কসপ, জ্বালানি সংরক্ষনের জন্য ১টি ওয়েল ট্যাংকার ছিল। কর্মকর্তাদের ক্রমাগত দুর্নীতি আর অনিয়মের কারনে বাংলাদেশ ফিসিং ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন ২০০০ সালে মৎস্য গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের কাছে প্রতিষ্টানটি হস্তান্তর করে। এর পর গবেষনার জন্য স্থাপন করা হয় ল্যাবরেটরি ও পদায়ন করা হয় গবেষনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল। নির্মান করা হয় বিভিন্ন পুকুর ও সেড। কিন্তু বর্তমানে এখানে কোনো গবেষনা না করে বাংলাদেশে মৎস্য গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের উদ্ভাবিত ২০টি মিঠা পানির প্রজাতির মাছের মধ্যে তেলাপিয়া, রুই, কাতল, মৃগেল প্রজাতির মাছ স্থানীয় মৎস্য চাষীদের চাষ করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাও আবার প্রকৃতি মৎস্য চাষীদের উৎসাহিত করা হয়না।
উপজেলায় কমপক্ষে ৭০টির মত পোনা রেনু করার হেচারি রয়েছে তাদের অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার পোনা রেনুর বড় হেচারি করে থাকেন মো.সেীরভ শিকদার এবং মো.হিরন শিকদার মো. মোসলেম খাঁন। এখানে গবেষনা কাজের জন্য রয়েছে একটি রিফেক্ট মিটার। এই রিফেক্ট মিটারের সাহায্যে প্রতি সপ্তাহে একবার করে আন্ধারমানিক নদীর কলাপাড়া ফেরিঘাট, বাদুরতলী ও বালীয়াতলী পয়েন্ট থেকে পানি সংগ্রহ করে লবনাক্ততা পরীক্ষা করার কাজ শুরু করে তাও কয়েক বছর আগে। কিন্তু বর্তমানে উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আসার পর তার দ্বারা একবারেও সম্ভব হয়নি ও তিনি তাও আবার জানেন না। এ পরীক্ষার মাধ্যমে ভবিষ্যৎতে নদীতে খাঁচায় মাছ চাষের উদ্যোগের মধ্যেই তাদের সকল কর্মকান্ড শেষ প্রতিষ্টানটির এত সংকটের কারন হিসেবে কর্মকর্তা দায়ী করেন, জনবল সংকট, ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামোর অভাব। এখানে গবেষনার জন্য একজন উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা , দুইজন গবেষনা সহকারী কর্মকর্তা ও একজন এম এল এস এস পদ থাকার কথা। অথচ একজন উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা , দুইজন গবেষনা সহকারী কর্মকর্তা ও একজন এম এল এস এস দিয়ে চলছে প্রতিষ্টানটি। কিন্তু  বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার পদটি দীর্ঘ দিন খালী রয়েছে। গবেষনার জন্য ২০-২৫টি পুকুর দরকার হলেও এখানে রয়েছে ১১টি ছোট পুকুর। অনেক বছর থেকে বরফ কলটি পরিত্যক্ত অবস্থা পড়ে রযেছে।
কলাপাড়ার সফল মৎস্য চাষী সৌরভ শিকদার, বলেন, সমুদ্র উপকুলের মাছ চাষীদের জন্য প্রতিষ্টানটি স্থাপন করা হলেও আজ পর্যন্ত আমরা উন্নত জাতের মাছ চাষের প্রশিক্ষন এবং ভাল জাতের কোন মাছের রেনু এখানে আমরা পাইনি। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকতা মাছ চাষের প্রশিক্ষন নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রকৃত   রেনু মৎস্য চাষীরা মৎস্য গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের কাছ থেকে পাচ্ছে না কোনো ভাল মন্ধ মতামত। কোন পোনা রেনু করলে ভাল হবে। কোনটি করলে ভাল হবে না এ পরামর্শ টুকু। রেনু চাষীরা কিভাবে পুকুর তৈরি করবে। কতো টুকু পানি রাখতে হবে। কিকি ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। পুকুরে গ্যাস হলে মৎস্য চাষীরা কি করবে তারাতো চিন্তিত থাকে এ ব্যাপারে। এ সকল পরামর্শ টুকু দেয়া হয় না।
টিয়াখালী ইউনিয়নের বাদুরতলী গ্রামের রেনু চাষী মোসলেম খানঁ বলেন, মৎস্য গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের ফিশারীর বড় পুকুরে বড় বড় জাতের মাছ আছে ঐ মাছের তারা ডিম চেয়ে ছিলেন রেনু করার জন্য উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকতার কাছে। কিন্তু  সফল মৎস্য চাষীর কথার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। আজ পর্যন্ত তারা কোনো নতুন জাতের কোনো মাছের রেনু পাইনি। তাদের কাছে থেকে কোনো সুযোগ সুবিধা দুরের কথা কোনো পরামর্শ পাওয়া যায়না।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া মৎস্য গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এস,এম, তানভীর রহমান জানান, মুলত এটি একটি নদী ভিক্তিক গবেষনা প্রতিষ্টান তাই মিষ্টি পানির মাছ কিভাবে চাষ করা যায় সে ভাবে আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এছাড়া গবেষণার জন্য এখানে প্রয়োজনীয় জনবল, ল্যাবরেটরিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো সংকট রয়েছে।

এএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৩:০৭ ● ৩৫৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ