আমতলীতে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে কামার শিল্পীদের

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে কামার শিল্পীদের
মঙ্গলবার ● ৩০ জুলাই ২০১৯


আমতলীতে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে কামার শিল্পীদের

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

রাতভর টুংটাং শব্দে লোহার যন্ত্রপাতি তৈরিতে ব্যস্ত আমতলী ও তালতলীর কামার শিল্পীরা। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে তারা দা, কুঠার, ছেনি, চাপাতি, কাটারী ও ছুড়ি  তৈরিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। একটু ফরসুত নেই তাদের।
কারবানী গবাদিপশু জবাই করতে এবং মাংস তৈরীতে দা, কুঠার, ছুড়ি, চাপাতি ও কাটারী বেশি প্রয়োজন। এ যন্ত্রপাতি তৈরিতে বরগুনার আমতলী,তালতলী উপজেলা ও হাট বাজারের কামার পাড়ায় রাতভর টুংটং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের প্রসারে ও বহুমাত্রিক সমস্যার কারনে গ্রাম বাংলার সেই কামার শিল্প আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। গত এক যুগ পূর্বে দু’উপজেলায় দু’শতাধিক  পরিবার এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিল। বর্তমানে আমতলী, তালতলী, পচাঁকোড়ালিয়া, ছোটবগী, কচুপাত্রা, আড়পাঙ্গাশিয়া, তালুকদার বাজার, গাজীপুর, চুনাখালী ও গোছখালীতে শতাধিক পরিবার এ পেশার সাথে জড়িত রয়েছেন। এ প্রজন্মের অনেক পরিবারের সন্তানরা এ পেশায় আসছে না।
মঙ্গলবার আমতলী কর্মকার পাড়া ঘুরে দেখা গেছে, কামার কারিগড়রা দা, বটি, কুঠার, ছেনিসহ প্রয়োজনীয় লোহার যন্ত্রপাতি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিক্রি তেমন ভালো না হলেও তারা লোহার যন্ত্রপাতি তৈরি করে পশরা সাজিয়ে বসে আছেন। দু’একজন ক্রেতা এসে দর কসাকসি করে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে পুরাতন দা, বটি ও ছেনি মেরামত করতে এসেছেন।
কামার শিল্পী গৌরঙ্গ কর্মকার বলেন পৈত্রিক ভাবে এ পেশায় এসেছি। এ বৃদ্ধ বয়সে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আমার সন্তানরা এ পেশায় আসতে চাচ্ছে না।
আমতলীর শ্যাম কর্মকার বলেন, “বাব-দাদায় এই কাম হরছে এ্যহোন মুই হরি। এই বুড়া বয়সে এ্যাহন আর পারছি না”।
তালুকদার বাজারের কালি দাস কর্মকার বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর দা. চাকু ও কুঠার বেশী বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ভাল লোহার দা কেজি প্রতি বিক্রি হয় ৫০০/৬০০ টাকা, প্রকারভেদে প্রতিটি ছুড়ি ২’শ৫০ থেকে ৩’শ টাকা, কাটারী ৩’শ ৫০ টাকা থেকে ৪’শ টাকায় বিক্রি করছি।
গাজীপুর বাজারের শম্ভু কর্মকার, বলেন, লোহার পাতের দাম বেশী হওয়াতে যন্ত্রাংশ তৈরীতে যে খরচ হয় সেই তুলনায় দাম পাচ্ছি না।
আমতলী পৌর শহরের গৌরাঙ্গ কর্মকারের দোকানের শ্রমিক পবিত্র কর্মকার বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কাজ অনেক বেশী। দিন রাত শুধু কাজেই ব্যস্ত থাকতে হয়।
আমতলী বটতলা এলাকার ক্রেতা নাসির উদ্দিন বলেন, ৪’শ টাকায় একটি নতুন বটি ক্রয় করেছি। আমতলী কর্মকার সমিতি’র সভাপতি পরিতোষ কর্মকার বলেন, বর্তমানে প্রযুক্তি’র বিকাশ ঘটায় গ্রাম বাংলার সেই কামার শিল্প আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এ শিল্পকে বাঁচাতে সরকারীভাবে উদ্যোগ নেয়ার দাবী জানাই।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৪:১৮ ● ৫৯৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ