ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
খালেদা জিয়া স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি অপরাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রোববার (২৮ জুলাই) মেয়েদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সাংবাদিকতা ফেলোশিপের সার্টিফিকেট ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠান আয়োজন করে রেডঅরেঞ্জ মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি প্রতিনিয়ত অপরাজনীতি করছে। প্রকৃতপক্ষে বেগম খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য সরকার সমস্ত কিছু করছে। দেশের সর্বোচ্চ মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জিহ্বায় যখন কামড় লেগেছিল, তখন তারা বলেছিলেন- বেগম জিয়ার জীবন শঙ্কার মুখে, তিনি কিছু খেতে পারছেন না। একটা ছোট্ট বিষয়কে তারা যেভাবে বলেছিলেন, সেটা অত্যন্ত হাস্যকর। এখন আবার তার দাঁতের ব্যাথা বা সামান্য সমস্যা দেখা দিয়েছে, এটা নিয়েও তারা বলছেন- বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য খুব খারাপ। ক’দিন পরপর এগুলো বলে তারা আসলে নিজেদের হাস্যস্পদ করে তুলছেন। অথচ বেগম জিয়ার জন্য কারাগারে একজন সার্বক্ষনিক চিকিৎসক ও নার্স রয়েছেন। তারা নিয়মিত তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। কোনো কোনো সময় তার ইচ্ছানুযায়ী ব্যক্তিগত চিকিৎসকরাও তা সাথে পরামর্শ করতে পারছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করা ঠিক নয়- উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এটা বিএনপির রাজনৈতিক দৈন্যতা। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে তারা অপরাজনীতি করছেন, এটা ঠিক নয়। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের অনেক মানুষ এখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তবে এটা মহামারি আকারে হয়নি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার সব ধরনের আয়োজন করেছে। ডেঙ্গু শুধু বাংলাদেশেই নয়, এশিয়ার অন্যান্য দেশেও হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে। কিন্তু বিএনপি যেভাবে সংবাদ সম্মেলন করে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বিষয়টিকে উপস্থাপন করছে এবং তাদের কথাবার্তা শুনে মনে হয় যেন মশায় কামড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী।
কোর্ট প্রশাসন নারীবান্ধব টয়লেট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গণমাধ্যমের রিপোর্টের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট পিরিয়ডকালীন টয়লেট স্থাপনে উদ্যোগী হয়েছে। মানুষের মনন তৈরি, সমাজকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করা ও ভাষাহীনদের ভাষা প্রকাশের ক্ষেত্রেও গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতিটি মানুষ গণমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। এখন এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তবে এর মাঝেও এই বিষয়টিকে (মেয়েদের পিরিয়ডকালীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা) লক্ষ্য করে আপনারা যে সাংবাদিকতা করেছেন, যেটি আমরা সচারচর আলোচনা করি না। আমি মনে করি, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়েছে। আপনারা এই বিষয়ে সংবাদ করেছেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট এই উদ্যোগ নিয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, একসময় আমাদের দেশে অটিস্টিক শিশুরা, যারা ঘরের কোণে পড়ে থাকতো। তাদের নিয়েও প্রধানমন্ত্রী ও তার মেয়ে কাজ শুরু করেন। ফলে ওইসব শিশুরা এখন বেরিয়ে এসেছে। এটা প্রমাণিত হয়েছে, তারা (অটিস্টিক শিশুরা) আমাদের সমাজের বা রাষ্ট্রের বোঝা নয়। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন সূচকের দিক থেকে এশিয়ার সব দেশের তুলনায় আমরা এগিয়ে আছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি সফল হয়েছে। দেশে বস্তুগত উন্নতি হয়েছে কিন্তু জাতির উন্নতিতে কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রের পাশাপাশি উন্নত জাঁতি গঠনে আমাদের কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের গুরুত্বও অপরিসীম।
আয়োজক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অর্নব চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এবং প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর প্রোগ্রামস অ্যান্ড অপারেশনস ইমরুল হাসান খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী আ. খ. ম. মহিউল ইসলাম, উপ সচিব ডা. আবুল হোসেন, যুগ্ম সচিব ডা. আশরাফুন্নেছা ও নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসির ডেপুটি হেড জেরয়েন স্টিগসসহ অনেকে।
এফএন/এমআর