পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
মৌসুমের শুরুতেই ৬৫ দিন অবরোধ শেষে ইলিশ শিকারে গভীর সমুদ্রে যাত্রা করেছে পটুয়াখালী উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৪৮ হাজার জেলে। গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের অদম্য ইচ্ছা থেকে জেলে পাড়া গুলোয় বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। মৌসুমের অর্ধেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও জেলেদের জালে মিলবে ঝাকে ঝাকে রুপালী ইলিশ, মৎস্য আড়ৎ গুলোয় ফিরে আসবে বানিজ্যিক প্রানচাঞ্চল্য এমনটাই প্রত্যাশা জেলেসহ ব্যবসায়ীদের।
অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২২ জুলাই রাতে শেষ হয়েছে ৬৫ দিনের মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা। দীর্ঘ এ অবরোধকালীন সময়ে জেলেরা সাগরে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেন আগেভাগেই। গভীর সাগরে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে সোমবার ভোর রাত থেকে ট্রলার নিয়ে দলে দলে যাত্রা শুরু করেছেন জেলেরা। গভীর সমুদ্র থেকে ট্রলার ভর্তি রুপালি ইলিশ নিয়ে জেলেরা ফিরবেন ঘাটে। জমে উঠবে দক্ষিনের সবচেয়ে বড় মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরের আড়ৎগুলো।
মৌসুমের শুরুতেই অবরোধ, অবরোধকালীন সময়ে প্রনোদনা না দেয়া এবং অবরোধকালীন সময়ে দেশের জলসীমানায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের জেলেদের মাছ ধরা নিয়ে ক্ষুদ্ধ জেলেরা। ৭ই জুলাই কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ৩২ভারতীয় ফিসিং ট্রলারসহ ৫১৯ জেলে কোষ্টগার্ডের কাছে নিরাপদ আশ্রয় নেয়ার ঘটনাকে এমন বস্তবতা বলে মনে করেছেন জেলেসহ ব্যবসায়ীরা। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে অবরোধকালীন সময়সীমা নির্ধারনের দাবী জেলেসহ ব্যবসায়ীদের।
আল্লাহর দান বোর্ডের মাঝি রহমান জানান, মাছ শিকার ছাড়া আর কোন পেশার অভিজ্ঞতা না থাকায় অ¦রোধকালীন সময়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে। আমরা জেলেরা অপেক্ষায় থাকি মৌসুমে ইলিশ শিকারের মাধ্যমে পরিবারের জন্য আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যসহ পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর। আলীপুর ফিশিং ট্রলার মাঝি সমিতির সভাপতি নুরু মাঝি বলেন, সরকারের দেয়া অবরোধ মেনেছি। কিন্তু ভারতীয় জেলেরা এ অবরোধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করে প্রচুর ইলিশ শিকার করে নিয়েছে। বিসমিল্লাহ ফিশিং ট্রলারের মাঝি গোলাম মোস্তফা বলেন, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে অবরোধ দেয়াসহ এসময়ে জেলেদের প্রনোদনা জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
মহিপুর মৎস্য বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফজলু গাজী বলেন, মৌসুমের শুরুতে অবরোধের ফলে দখিনের বড় মাছের মোকাম আলীপুর-মহিপুরের অড়ৎ গুলো হয়ে পড়েছিল নিস্প্রান। বেকার, আলস, মানবেতর সময় পার করেছেন সংশ্লিস্ট শ্রমিক। এখন কর্ম চঞ্চল হয়ে উঠছে। আশা করছি সাগরে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে। মৌসুমের শুরুতে অবরোধের ফলে যে অর্থনৈতিক ক্ষতি ব্যবসায়ীসহ জেলেদের হয়েছে এর মাধ্যমে আমরা তা পুািষয়ে নিতে পারব।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা বলেন, এ অবরোধের ফলে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ পরার সম্ভাবনা রয়েছে। অবরোধকালীন সময়সীমা নির্ধারনের জন্য জেলেদের দাবি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।
জেআর/এমআর