আমতলীতে নির্বাচনী সহিংসতায় মা ও শিশু কন্যা আহত

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে নির্বাচনী সহিংসতায় মা ও শিশু কন্যা আহত
বুধবার ● ১৭ জুলাই ২০১৯


আমতলীতে নির্বাচনী সহিংসতায় মা ও শিশু কন্যা আহত

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

আসন্ন আমতলী উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রার্থী মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধার সমর্থণ না করায় মা সাজেদা বেগম (৩৫) ও শিশু কন্যা ফারজানাকে (১১) নৌকার সমর্থকরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত মা ও শিশু কন্যাকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়নের ছোট নীলগঞ্জ গ্রামে বুধবার সকালে। এ মারধরের ঘটনা পারিবারিক দ্বন্ধ, এটা নির্বাচনী কোন দ্বন্ধ নয় বলে নৌকা প্রার্থী মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা শিশুকে মারধরের ঘটনার বিচার চেয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়নের ছোট নীলগঞ্জ গ্রামের ওরম ফারুক ঢাকায় একটি বে-সরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করেন। তার স্ত্রী সাজেদা বেগম শিশু কন্যা ফারজানাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে বসবাস করছেন। আসন্ন আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাজেদা বেগম স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধার সমর্থণ করে। আওয়ামীলীগ সমর্থক প্রতিবেশী মোঃ রশিদ হাওলাদার, গফফার হাওলাদার ও জয়নাল হাওলাদার এতে সাজেদার উপর ক্ষিপ্ত হয়। প্রায়ই তারা (নৌকার সমর্থকরা) সাজেদার বাড়ীর সামনে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এমন অভিযোগ সাজেদা বেগমের।
বুধবার সকালে  রশিদ হাওলাদার ও গফফার হাওলাদার স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক সাজেদার বাড়ীর সামনে দাড়িয়ে গালাগাল করছিল। এ সময় সাজেদা বেগমের ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ুয়া শিশু কন্যা ফারজানা তাদের কথার প্রতিবাদ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রশিদ হাওলাদার শিশুটিকে কিল,ঘুষি ও লাথি মারে। শিশুটির ডাক চিৎকারে মা সাজেদা বেগম এগিয়ে এলে তাকে গফফার হাওলাদার, জাকির হাওলাদার, পাভেল ও জয়নালসহ ৬/৭ জনে বেধরক মারধর করে। পরে সাজেদার গলায় থাকা স্বর্নের চেইন ও  মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। দ্রুত স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
আহত শিশু ফারজানা জানান, আমার মা ঘোড়া প্রতিকের সমর্থন করায় রশিদ, জাকির, গফফার,পাভেল প্রায়ই আমার মাকে ঘরের সামনে এসে গালাগাল করে। বুধবার সকালে এসে গালাগাল করলে আমি তার প্রতিবাদ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমাকে কিল,ঘুষি ও লাথি মেরেছে। আমাকে রক্ষায় আমার মা এগিয়ে এলে তাকেও তারা বেধরক মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজড়া বলেন, শিশুটির বুকে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। মা ও মেয়ের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, নৌকার প্রতিকের লোকজন আমার সমর্থক সাজেদা বেগম ও তার শিশু কন্যাকে মারধর করেছে। সাজেদা আক্তার আমার পক্ষ নেয়ায় মারধর করেছে কিন্তু একটি শিশুর কি অপরাধ করেছে? আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা তার সমর্থকদের মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, এটা কোন নির্বাচনী জের নয়। এটা তাদের পারিবারিক দ্বন্ধ। রশিদ হাওলাদার ও ওমর ফারুকের  মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। পারিবারিক দ্বন্ধকে নির্বাচনের দ্বন্ধ বলে চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তিনি আরো বলেন, ওই ছোট শিশুটিকে যারা মারধর করেছে আমি তাদের বিচার চাই।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, আমি খবর পেয়েছি। মা ও শিশুকে দেখতে আমতলী হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৫ জুলাই।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৭:৫৪ ● ৪১২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ