আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার কাঠালিয়া তাজেম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ছাত্রী ধর্ষনের ঘটনায় ধর্ষক লম্পট শিক্ষক জহিরুল ইসলামের বিচার চেয়ে পোস্টার লাগানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও জনগণের পক্ষে বিচার দাবী করে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও স্ট্যান্ডে পোস্টার লাগানো হয়।
জানাগেছে, উপজেলার কাঠালিয়া তাজেম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক মোঃ জহিরুল ইসলাম গাজী ২০১৫ সালে ২২ জুলাই বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকেই বিদ্যালয়ের ছাত্রীদেও উত্যাক্ত করে আসছিল। এ বিষয়টি কয়েকবার প্রধান শিক্ষকের নজরে আনেন শিক্ষার্থীরা। প্রধান শিক্ষক তাকে শাসিয়ে দেন। ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে গত বছর ডিসেম্বর মাসে শিক্ষক জহিরুল ইসলাম অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। শুরুতে ওই ছাত্রী তার প্রস্তাবে রাজি হয়নি। ওই ছাত্রীর অভিযোগ পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে গত ছয় মাস ধরে তাকে শিক্ষক জহিরুল ইসলাম গাজী একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। এতে এ বছর ফেব্রুয়ারী মাসে ওই ছাত্রী অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়ে। অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা শিক্ষক জহিরুল ইসলাম জানতে পেরে জোরপূর্বক গর্ভপাত করার চেষ্টা করে। কিন্তু ওই ছাত্রী তাতে রাজি হয়নি। এ ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে শিক্ষক জহিরুল ইসলামের বড় ভাই কুকুয়া আদর্শ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফারুক গাজী ছাত্রীর বাবাকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে গর্ভপাত করতে চাপ দেয়। ওই ছাত্রীর বাবা এতে রাজি না হওয়াতে জোর করে পটুয়াখালী নিয়ে গর্ভপাত করেছে বলে অভিযোগ ওই ছাত্রীর। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন ধর্ষক শিক্ষক জহিরুল ইসলামের বিচার দাবী করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর দাদা বাদী হয়ে ৩০ জুন রাতে আমতলী থানায় শিক্ষক জহিরুলকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও ধর্ষক জহিরুলকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি তাকে কেন চাকুরী থেকে সাময়ীক বরখাস্ত করা হবে না মর্মে ৭ দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে নোটিশ দেন। ওই নোটিশের জবাব দেয়ার ৭ দিন (সোমবার) অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও জবাব দেয়নি শিক্ষক জহিরুল।
সোমবার আমতলী উপজেলার কাঠালিয়া, টেপুড়া, মহিষকাটা, আজিমপুর, গাজীপুর ও আমতলী উপজেলা পরিষদ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ধর্ষক শিক্ষক জহিরুল ইসলাম গাজী ও আশ্রয়ভাতা তার বড় ভাই মোঃ ফারুক গাজীর বিচার চেয়ে দেয়ালে ও ভবনের পাশে পোষ্টার লাগানো হয়েছে।
কাঠালিয়া তাজেম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ আওলাদ হোসেন বলেন, শিক্ষক জহিরুল ইসলামকে দেয়া নোটিশের কোন জবাব দেয়নি তিনি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা ডেকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী থানার এসআই মোঃ ফয়সাল বলেন, ওই ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা এবং ২২ ধারায় জবানবন্দী নেয়া হয়েছে। আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এমএইচকে/এমআর