রাজাপুরের প্রধান সড়কে বেহাল দশা

প্রথম পাতা » ঝালকাঠী » রাজাপুরের প্রধান সড়কে বেহাল দশা
রবিবার ● ৭ জুলাই ২০১৯


রাজাপুরের প্রধান সড়কে বেহাল দশা

ঝালকাঠি সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা শহরের প্রধান সড়কে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আরসিসি ঢালাই ও ড্রেন নির্মান কাজের টেন্ডারের কার্যাদেশ জটিলতায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পুণঃনির্মাণ কাজ শুরুর আগেই পিছিয়ে গেছে। এতে সড়কগুলো দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
সড়কের মধ্যে বড় বড় খানাখন্দ বৃষ্টির পানি জমে কর্দমাক্ততায় একাকার হয়ে রাজাপুরবাসীর গলার কাটায় পরিনত হয়েছে। বর্তমান বর্ষায় চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। কর্দমাক্ত পানিতে বেশি নাজেহাল হতে হচ্ছে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা পড়ছে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে। তারা এসব রাস্তা নিয়ে চলতে গিয়ে একদিকে পোষাক নষ্ট হচ্ছে, অপর দিকে একের পর এক দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজাপুর বাজার থেকে নাপিতেরহাট ভায়া মঠবাড়ি ইউপি অফিস নামক এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ পীচঢালা সড়কটি নতুন করে আরসিসি ঢালাই সড়ক ও ড্রেন নির্মান করার লক্ষ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়ার সর্বনি¤œ দরে কাজ সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি বদ্ধ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে না পারায় এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি বন্ধ সর্বনি¤œ দরে সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় কারনে টেন্ডার প্রক্রিয়া পরিবর্তন করে পুনরায় চলতি জুলাই মাসের ১৭ তারিখে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদরের থানা রোড, বাজার রোড, স্কুল মাকের্ট, ডাকবাংলো মোড় ও বাইপাস এলাকার সড়কের খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে একাকার হয়ে গেছে। পায়ে হাটার কোন সুযোগ তো নেই, রিক্সায় চড়াও দায়। স্থানীয়রা জানান, একদিকে পূর্বের রাস্তা সংস্কারের অনিয়ম, অন্যদিকে এসব রাস্তায় ড্রেনেস ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে দ্রুত রাস্তায় খানাখন্দ সৃষ্টি হচ্ছে। থানা রোডে ড্রেনেস ব্যবস্থা থাকলেও তা দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় মাটি জমে পানি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বৃষ্টি হলেই হাটু পানি জমে যায়। ফলে সাব রেজিস্টার অফিস, কয়েকটি প্রধান স্কুল কলেজ, মাদরাসা, মসজিদের যাতায়াতকারী মুসল্লিরাসহ পথচারিদের রাস্তার কাঁদাপানিতে কাপড় ময়লায় একাকার হতে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা থাকলেও সঠিক ভাবে এর ব্যবহার না হওয়ায় বৃষ্টি হলেই পানি জমে। ভবনের ময়লার টেঙ্কির সব ময়লা এই ড্রেনে ছেড়ে দেয় ফলে এ দুই মিলে পরিবেশ দূষন হচ্ছে আর বিভিন্ন রোগ ছড়াচ্ছে। আর এ দুর্গন্ধ কারনে সব সময় নাক চেপে হাটতে হয় পথচারিদের। রাস্তার দু’পাশের ব্যবসায়ীরা জানায়, বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে, ফলে রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাতায়াত করলে দোকানের মধ্যে কর্দমাক্ত পানি প্রবেশ করে দোকানে থাকা জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। ডাকবাংলো ও পাইপাস এলাকার লোকজন জানান, সড়কটি সংস্কার করা হয়েছে তা বেশি দিন হয়নি, কিন্তু সঠিকভাবে সংস্কার না করায় কিছুদিন যে না যেতেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করলেও রাজাপুর শহরের একমাত্র প্রধান সড়কগুলোর এ অবস্থায় হতাশ পুরো রাজাপুরবাসী। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কই উপজেলা শহরের প্রধান সড়ক হওয়া প্রতিদিন কোমলমতি শিশুসহ সকলকে ভোগান্তি পোহালেও সংশ্লিষ্ট কারও মাথা নেই। বছরের আগা-মাথায় সংস্কার হলেও নামকাওয়াস্তে সংস্কার ও সংস্কারের অর্থ লুটপাটের কারনে কয়েক মাস যেতে না যেতেই যেই সেই হয়ে যায় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। উপজেলা এলজিইডির অফিসের পরিদর্শক মোঃ সুমন হোসেন জানান, প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ পীচ ঢালাই সড়কটি পুনরায় আরসিসি ঢালাই সড়ক ও ড্রেন নির্মান করার লক্ষ্যে আগামী ১৭ জুলাই নতুন করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার আহবান, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই খুব শীগ্র কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আরআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:২১:২৮ ● ৮৫৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ