পায়রায় বাঙালী শ্রমিকদের কাজে যোগদানে ফিরছে কর্মমুখর পরিবেশ

প্রথম পাতা » সর্বশেষ » পায়রায় বাঙালী শ্রমিকদের কাজে যোগদানে ফিরছে কর্মমুখর পরিবেশ
বুধবার ● ৩ জুলাই ২০১৯


পায়রায় বাঙালী শ্রমিকদের কাজে যোগদানে ফিরছে কর্মমুখর পরিবেশ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

কলাপাড়ায় পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকা ফের কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। বুধবার দুপুর থেকে পাওয়ার ব্লকসহ প্লান্ট অভ্যন্তরে বাঙালী শ্রমিকদের কাজে যোগদান করায় গোটা প্লান্ট এলাকায় প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে। অন্তত পাঁচ শ’ বাঙালী শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছে। আরও শ্রমিক আজ বৃহস্পতিবার থেকে কাজে যোগ দিবে বলে বিসিপিসিএল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। নতুন করে ১২টি ম্যান পাওয়ার এজেন্সীকে শ্রমিক সরবরাহের জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে।
নর্থ ইস্ট (নাম্বার-১) ইলেকট্রিক পাওয়ার কন্সট্রাকশন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনইপিসি) কর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে আরও এজেন্সীকে শ্রমিক সরবরাহের অনুমতি দিবে বলে জানা গেছে। বিসিপিসিএল এর জুনিয়র এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহমনি জিকো আরও জানান, এখন পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় চীনা ও বাঙালী শ্রমিকদের পদভারে মুখরিত রয়েছে। তারা সমন্বিতভাবে বিদ্যুত প্লান্টের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ১৮ জুন পাওয়ার ব্লকের বয়লার এলাকায় কর্মরত অবস্থায় সেফটি বেল্ট খুলে ওপর থেকে নিচে পড়ে বাঙালী শ্রমিক সাবিন্দ্র দাস নিহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট গুজবে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্লান্ট অভ্যন্তরে চীনা শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। ওই রাতে ফের দ্বিতীয় দফা ব্যাপক হামলা ভাংচুরে প্লান্ট অভ্যন্তরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। চুরি হয় অফিসের ল্যাপটপসহ গুরুত্বপুর্ণ মালামাল।
এ ঘটনার পর থেকে প্রায় ছয় হাজার বাঙালী শ্রমিকদের ১৫দিনের ছুটি দেয়া হয়। তবে চীনা শ্রমিকরা তিনদিন পরেই কাজে যোগ দেয়। ইতোমধ্যে বাঙালী শ্রমিকদের সকল বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়। নিহত শ্রমিক সাবিন্দ্র দাসের পরিবারকে ২৯ জুন, শনিবার ১৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়। প্লান্ট অভ্যন্তরে হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় কলাপাড়া থানায় পৃথক দু’টি মামলা করেন কলাপাড়া থানায় পৃথক দু’টি মামলা করেন এনইপিসির সেফটি ডিরেক্টও ওয়াং লিবিং। মামলায় অজ্ঞাত ১২ শ’ জনকে আসামি করা হয়।
পুলিশ এ মামলায় তিন দফায় মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করে। এরা সবাই জেল হাজতে রয়েছে। এর মধ্যে আদালতের নির্দেশে ১৬ জনকে এক দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
বর্তমানে পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় শ্রমিকদের উপস্থিতিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। এনইপিসি’র ভাইস ম্যানেজার মিঃ উ নিশ্চিত করেছেন চীনা ও বাঙালী শ্রমিকরা যৌথভাবে কাজ শুরু করায় পাওয়ার প্লান্টের নির্মাণ কাজ যথাসময় শেষ হবে; এনিয়ে কোন শঙ্কা নেই। অপরদিকে পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র অভ্যন্তরে ছাড়াও মূল ফটকে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। বসানো হয়েছে সব ক’টি গেটে চেক পোস্ট। দীর্ঘ ১৫দিন পরে ফেল বাঙালী শ্রমিকদের কাজে যোগ দেয়ায় ভেতরের পরিবেশ কর্মমূখর রয়েছে। কলাপাড়ার ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান জানান, পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র এখন সম্পুর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। রয়েছে কর্মমুখর। কাজকর্ম স্বাভাবিক রয়েছে। কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকার সকল ধরনের নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ইতোপূর্বে অন্তত ৫০টি বৈধ-অবৈধ এজেন্সী ম্যানপাওয়ারের ব্যবসা করে আসছিল। যার মধ্য থেকে মাত্র ১২টিকে নতুন করে শ্রমিক সরবরাহের জন্য নিযুক্ত দেয়ার খবরে বাকি প্রায় ৩৮টি কোম্পানির লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে আছে। এরা বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারছে না। এনিয়ে নানা কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে।

এমইউএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৮:৪৯ ● ৩১৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ