বানারীপাড়া (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বানারীপাড়ায় উপজেলা শ্রমিক লীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মো.শাহজাহান হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেন মীরের বিরুদ্ধে দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গ করা সহ সংগঠন পরিপন্থি কার্যকলাপের অভিযোগ এনে ৩০ নেতা-কর্মী অনাস্থা দিয়েছেন। একই সাথে পৌর শ্রমিক লীগের ৫ নেতা-কর্মী ওই অনাস্থা প্রস্তাবে একত্বতা প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার উপজেলা ও পৌর শ্রমিক লীগের ৩৫ জন নেতা-কর্মী স্বাক্ষরীত ওই অনাস্থা প্রস্তাব কার্যকর করারা জন্য জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান’র বরিশালস্থ্য নতুন বাজার পুলিশ ফারী সংলগ্ন বাসভবনে পৌছে দেয়ার পাশাপশি বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লাকে অবহ্নিত করা হয়েছে। অপরদিকে লঞ্চ ঘাটের ইজারা নিয়ে দন্দের কারণে এ অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে বলে দাবী করেছেন উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেন মীর।
এ বিষয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা শ্রমীক লীগের সহ-সভাপতি মো. সাহেব আলী মোল্লার সভাপতিত্বে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় উপজেলা শ্রমীক লীগের ৪৫ জন নেতা-কর্মীর মধ্যে ৩০ জন ও পৌর শ্রমিক লীগের ৫ জন নেতা-কর্মী স্বাক্ষরীত অনাস্থা প্রস্তাবে উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান হাওলাদারকে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি বলে উল্লেখ করার পাশাপশি সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেন’র বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অভিযোগ আনা হয়। ২০১৬-১৭ সালে শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন না করা, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভূমিকা পালন না করা, দুই বছরের জন্য উপজেলা শ্রমিক লীগের কমিটি গঠন করা হলেও ২০১৬ সালের ২৪ মের পর থেকে সংগঠনকে বেগবান করার লক্ষে অদ্যবধি কোন কর্মী সভা না করার পাশাপশি উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে শ্রমিক লীগের কমিটি গঠন না করা এবং শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে মতানৈক্য সৃষ্টি করা। এছাড়াও উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেন মীরের স্ত্রী বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হতে চাওয়া ও তার ছেলে রাজু মীর’র বিরুদ্ধে ছাত্র দলের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। অবশ্য এ বিষয়ের সত্যত্বা অশ^ীকার করে উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান হাওলাদার বলেন, সম্প্রতি বানারীপাড়া লঞ্চ ঘাটের ইজারা নিয়ে উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মো. ফিরোজ ও পৌর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেনের সাথে মতানৈক্য শৃষ্টি হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ এনে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে একটি মনগড়া অনাস্থা প্রস্তাব কৈরী করেছেন।
এবিষয়ে উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মো. ফিরোজ ও পৌর শ্রমিক লীগের সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া তার সাথে লঞ্চ ঘাটের ইজারা নিয়ে আমাদের কোন ধরণের দন্দ নেই বলেও তারা দাবী করেন। অপরদিকে উপজেলা শ্রমিক লীগের সম্পাদক সুলতান হোসেন মীর তার স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শাহজাহান হাওলাদারের সাথে লঞ্চ ঘাটের ইজারা নিয়ে ফিরোজ ও আনোয়ার হোসেনের দন্দ চলে আসছিল। তিনি ফিরোজ ও আনোয়ারের পক্ষ না নিয়ে শাহজাহানের সাথে থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পরেও যদি কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতার প্রমান দিতে পারেন তা হলে তিনি শ্রমিক লীগের যে কোন সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিবেন বলেও সুলতান হোসেন জানান।
এদিকে বরিশাল জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান বলেন, আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার জন্য চার দিন আগে ঢাকায় এসেছি। তিনি অনাস্থা প্রস্তাবের কোন কপি এখনও হাতে পাননি এবং সেটি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যপারে কোন ধরণের মন্তব্য করবেন না বলেও তিনি জানান। এছাড়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে উক্ত অনাস্থা প্রস্তাবের একটি ফটোকপি বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সালে মঞ্জু মোল্লার হাতে পেয়েছেন বলে জানান।
জিএমআর/এমআর