আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিশেষ ভিজিএফ চাল বিতরনে তদারকি কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নৈশপ্রহরী আমিনুল ইসলাম। এতে চাল বিতরন কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন উপকারভোগীরা। নৈশ প্রহরী আমিনুল ইসলাম দাবী করেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার মোঃ সেলিম মাহমুদ তাকে চাল বিতরন কার্যক্রমের দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন।
জানাগেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমতলী উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৩৫ হাজার ৫’শ ৮৬ দুঃস্থদের মাঝে জন প্রতি ১৫ কেজি করে ৫৩৩.৭৯ মেট্রিক টন বিশেষ ভিজিএফ’র চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এ চাল সুষ্ঠুভাবে বিতরনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন করে তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ দেন। আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের ৪ হাজার ৮৬ জন উপকারভোগীদের মাঝে চাল বিতরনের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার মোঃ সেলিম মাহমুদকে তদারকি কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয়। সোমবার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের চাল বিতরন করা হয়। ওই চাল বিতরন কার্যক্রম তদারকি করতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার মোঃ সেলিম মাহমুদ না গিয়ে তার অফিসের নৈশপ্রহরী আমিনুল ইসলামকে পাঠান। নৈশ প্রহরী আমিনুল ইসলাম নিজেকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার ও তদারকি কর্মকর্তা দাবী করে চাল বিতরন কার্যক্রম শুরু করেন। উপকার ভোগীরা জানান, নৈশ প্রহরী আমিনুল ইসলাম ইউপি সচিব সুমান্ত দাশের সাথে যোগসাজসে চাল ওজনে কম দিচ্ছে। ১৫ কেজির পরিবর্তে দিচ্ছেন সাড়ে ১৩/১৪ কেজি। উপকারভোগী মেরি বেগম, দুলু বেগম, আমেনা রিজিয়া ও হাসিয়ারা জানান, এক বস্তা চাল দু’জনকে দিচ্ছেন তাতে এক এক জনে পেয়েছি সাড়ে ১৩ কেজি। তারা আরো জানান, তদারকি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে চাল কম দিচ্ছেন।
আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সুমান্ত দাশ বলেন, চাল বিতরনে তদারিক কর্মকর্তা হিসেবে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার মোঃ সেলিম মাহমুদের পরিবর্তে নৈশ প্রহরী মোঃ আমিনুল ইসলাম এসেছেন। তিনি আরো বলেন, নৈশ প্রহরী আমিনুল ইসলাম চাল বিতরনের কার্যক্রম তদারকি করছেন। তবে তিনি চাল বিতরনে কম দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার মোঃ সেলিম মাহমুদ বলেন, আমি চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যাবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনের দায়িত্বে থাকায় আমার প্রতিনিধি হিসেবে নৈশ প্রহরী আমিনুল ইসলামকে চাল বিতরন কার্যক্রম তদারকি করতে পাঠিয়েছি। একজন নৈশ প্রহরী চাল বিতরন কার্যক্রম তদারকি করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
আঠারোগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন,তদারকি কর্মকর্তা একাডেমিক সুপার ভাইজার মোঃ সেলিম মাহমুদকে চাল বিতরনের বিষয় অবহিত করলে তিনি না এসে তার প্রতিনিধি অফিসের নৈশ প্রহরী আমিনুল ইসলামকে পাঠিয়েছেন। তিনি চাল কম দেয়ার কথা অস্বীকার করে আরো বলেন গোডাউন থেকে ৩০ কেজির বস্তা চাল দিয়েছে। ওই এক বস্তা চাল দু’জনকে দিয়েছি। ওজনে কম হলে গোডাউন থেকে বস্তায় কম দিয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান বলেন, চাল বিতরন কার্যক্রমে একজন নৈশপ্রহরী তদারকি কর্মকর্তার প্রতিনিধি হতে পারে না। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর