ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
রাজধানীর নগর পরিবহনের লক্করঝক্কর বাসগুলো ঈদে মহাসড়কে যাত্রী পরিবহনে প্রস্তুত। জোর চেষ্টা করেও যারা ট্রেনের টিকিট পায়নি, বাধ্য হয়ে তারা সড়ক পরিবহনের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে। পাশাপাশি তৈরি পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যাত্রী চুক্তিতে পরিবহনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজধানীতে পুরনো বাস নতুন রঙে সাজানো হয়েছে, সারানো হয়েছে ইঞ্জিনসহ বিভিন্ন অংশের ত্রুটি। এগুলোর বেশির ভাগই নগর পরিবহনের লক্কড়ঝক্কড় বাস। ওসব বাসের বেশির ভাগেরই ফিটনেস নেই। মূলত ২৯ রোজা থেকেই ওসব বাস মহাসড়কে নামানোর প্রস্তুত হচ্ছে। বিআরটিএ এবং সড়ক পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মহানগরীর কোনো রুটের কোনো বাসই মহাসড়কে চালানোর সরকারি অনুমতি বা রুট পারমিট নেই। তারপরও ফিটনেসবিহীন বিপুলসংখ্যক বাস মেরামক কারখানায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু বিআরটিএ ও পুলিশ তা প্রতিরোধে তেমন কোনো অভিযান চালাচ্ছে না। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ফিটনেসহীন বাস মহাসড়কে না নামাতে বহু আগে থেকেই আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তারপরও মালিকরা বেশি মুনাফার লোভে এখন ঢাকায় বাস চালানো বন্ধ রেখে ঈদে দূরপাল্লার যাত্রী টানতে প্রস্তুত হয়েছে।
সূত্র জানায়, ফিটনেসহীন বাস মহাসড়কে চললে প্রায়ই প্রাণহানি ঘটে। গত কয়েক বছর ধরে ঈদ যাত্রায় ওসব বাস দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে গেলে সরকার ওসব বাস চলাচল বন্ধে কঠোর হয়। পরে অবশ্য তদারকি ঝিমিয়ে পড়ে। বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যানুসারে, দেশে ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে সংঘটিত দুর্ঘটনার শিকার গাড়িগুলোর মধ্যে ৬০ হাজার ৬৬১টিই ছিল ত্রুটিপূর্ণ। আর বিআরটিএর সর্বশেষ তথ্যানুসারে, রাজধানীতে ফিটনেস ছাড়াই চলছে আড়াই লাখ গাড়ি। প্রায় ৮৮ শতাংশ বাসের ফিটনেস নেই। বেশির ভাগের আয়ুকাল ২০ বছর পার হয়ে গেছে। কোনোটির দরজা-জানালা ভাঙা, নেই আরামদায়ক আসনও। দুই স্তরের কাঠামো (স্টিল ও ফোম বা কাপড়) নেই ৮০ শতাংশ বাস-মিনিবাসের।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল আলমের অভিমত হচ্ছে, ফিটনেসহীন গাড়ির বিরুদ্ধে বেশি অভিযান চালাতে হবে।
একই প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মফিজউদ্দিন আহম্মদ জানান, ফিটনেসহীন বাস যাতে মহাসড়কে না নামতে পারে সে জন্য পুলিশ সজাগ রয়েছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বলেন, বিআরটিএ’র নির্বাহী হাকিমরা অভিযান চালাবে। তাছাড়া বিআরটিএর একটি বিশেষ টিমও থাকবে।
এফএন/এমআর