ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
এবারের ঈদযাত্রায় বৃষ্টিপাত হলেও সড়ক-মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (১ জুন) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রার ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। কয়েকদিনের গরমের ভোগান্তির পর শনিাবর ভোর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়। এতে নগরজীবনে কিছুটা স্বস্তি এলেও ঈদে ঘরমুখো মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। তাঁরা বাসাবাড়ি থেকে বের হয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো হন।
আবহাওয়া কার্যালয় থেকে জানানো হয়, শনিাবর সকালে ঢাকায় ৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গটি সামনে রেখে প্রশ্ন করা হলে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, ঈদ পর্যন্ত এই স্বস্তিদায়ক যাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং ঈদের পরেও মানুষ কর্মস্থলে ফিরে আসবে, কোনো অসুবিধা নেই। এবার রাস্তা ভালো, রাস্তার কারণে মহাসড়কে যানজটের কোনো কারণ নেই। বৃষ্টি-বাদল হলে হয়তো কোথাও গাড়ির গতি কিছুটা ধীর হবে, কিন্তু যানজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা এবার নেই। ঈদকে কেন্দ্র করে সড়কে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, চাঁদাবাজির ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার কাছে চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ আসেনি। এ ছাড়া কারো কোনো অভিযোগ থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়াকে আজকে কারাগারে বন্দি রেখেছে কে? সরকার, না মামলা? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মামলার কারণে তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে আদালতের রায়ে কারাগারে আছেন। আদালতে খালেদা জিয়াকে সরকার পাঠায়নি। যদি সরকারকে দায়ী করেন, তাহলে সেটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার। দেশে আইন আছে, বিচার ব্যবস্থা আছে, আইন অনুযায়ী তিনি আদালতে গেছেন। আদালত তাঁকে কনভিকশন দিয়েছে, সাজা দিয়েছে এবং সেভাবেই তিনি জেলে আছেন। এখন লিগাল ব্যাটল করে বিএনপির নেতারা তাঁকে মুক্ত করে আনতে পারেন। এখানে সরকারের কোনো করণীয় নেই। বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার।
বিএনপির আন্দোলনের প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যে কথা বলে, তাঁরা খালেদা জিয়াকে আন্দোলন করে বের করবে। খালেদা জিয়ার সাজা পাওয়ার পর এতদিন চলে গেল, আন্দোলনের উত্তাপ রাজপথে সঞ্চারিত করতে পারেনি বিএনপি, সেটা তাদের ব্যাপার। আন্দোলন যদি তারা করে, সেই আন্দোলনও তো সরকারের বিরুদ্ধে না। সাজা দিয়েছেন আদালত, আদালতের বিরুদ্ধে তারা আন্দোলন করতে পারে। এখানে সরকারের কিছু করণীয় নেই।
ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর সংগঠনটিতে যে জটিলতা চলছে, তার অবসান অচিরেই ঘটানোর আশা দেন ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের একথা বলার সময়ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে বিক্ষুব্ধ একদল ছাত্রলীগ নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিল। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা রয়েছে তাদের।
সম্মেলনের এক বছর পর ১৩ মে ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলে তা পুনর্গঠনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পদ না পাওয়া কিংবা প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতারা। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাদের আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে সহযোগী সংগঠনটির দেখভাল করে আসছিলেন। এবার তিনি অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকার মধ্যে জটিলতা দেখা দেয়। ছাত্রলীগের সমস্যার সমাধান কবে নাগাদ হতে পারে- সাংবাদিকদের প্রশ্নে কাদের বলেন, আমার অনুপস্থিতিতে ছাত্রলীগের কমিটির ব্যাপারে নেত্রী আমাদের দলের চারজন নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের কমিটি গঠন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা সাংগঠনিক সমস্যা সমাধানে। তাদের সাথে আমার কথাবর্তা হয়েছে, যোগাযোগ হচ্ছে। আন্দোলন-প্রতিবাদ করছে যারা, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। আমি আশা করি, অচিরেই সমাধান হবে।
এফএন/এমআর