রাঙ্গাবালীতে কিশোরী সিমাকে গণধর্ষণ ও হত্যা ফুসছে এলাকাবাসী

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » রাঙ্গাবালীতে কিশোরী সিমাকে গণধর্ষণ ও হত্যা ফুসছে এলাকাবাসী
বৃহস্পতিবার ● ২৪ জানুয়ারী ২০১৯


---

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় কিশোরী সিমা আক্তারকে গণধর্ষণের পর হত্যা করার ঘটনায় জড়িত আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তার পরিবার ও স্বজনরা। এই দাবিতে বুধবার বিকেলে উপজেলার সামুদাবাদ গ্রামে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা-সিমা হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। এতে নিহত সিমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনসহ প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
এই মানববন্ধনে নিহত সিমার মা তাসলিমা বেগম বলেন, ‘তিনি একটি ধর্ষণ মামলার স্বাক্ষী ছিলেন। তাই তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দেওয়া হতো। ওই মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় তার মেয়ে সিমাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এই ঘটনায় জড়িত সব আসামিদের গ্রেফতার ও তাদের ফাঁসির দাবি জানান।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আসামিরা তাকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি ধামকি দেয়ায় তিনি নিজে ও তার পরিবারের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই তিনি সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন।’
গতবছরের ২৪ অক্টোবর উপজেলার সদর ইউনিয়নের সামুদাবাদ গ্রামে নিজ বাড়িতে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন ১৩ বছরের কিশোরী সিমা আক্তার। সে রাঙ্গাবালী হামিদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রী ছিল। এ ঘটনায় তিন মাস পর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারী পটুয়াখালী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশি অভিযোগ করা হয়। সিমার মা তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।
সেই অভিযোগটি ট্রাইব্যুনাল আমলে নিয়ে রাঙ্গাবালী থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক মামলা দায়ের করার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়ে শনিবার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ওইদিন রাতেই মামলার ৪ নম্বর আসামি স্থানীয় ইউপি সদস্য নবীনূরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া দানেশ চৌকিদার নামের অপর এক আসামিকে শোন-এ্যারেষ্ট দেখানো হয়েছে।
তারা দুইজন ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হল-সুমন চৌকিদার, সেরাজুল চৌকিদার, ছাদের চৌকিদার, ইমরান চৌকিদার, রাকিব  চৌকিদার ও মোফা। তাদের মধ্যে শুধু মোফার বাড়ি উপজেলার কাছিয়াবুনিয়া গ্রামে  এবং বাকিদের বাড়ি সামুদাবাদ গ্রামে।
নিহত সিমার মা তাসলিমা মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া এক ছাত্রীর  ধর্ষণ মামলার ২ নম্বর স্বাক্ষী হওয়ায় আসামিরা বিভিন্ন সময় তাসলিমাকে হুমকি ধামকি দিত। ওই ছাত্রীর মত তাসলিমার মেয়েরও একই অবস্থা করবে বলেও হুমকি দিয়েছিল। পরে পিবিআই কর্মকর্তার কাছে সেই  মামলার স্বাক্ষী দেয়ায় আসামিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়। এরপর (গতবছরের ২৪ অক্টোবর) সকাল ৮ টায় বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ে  সিমাকে ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়া শব্দ পাননি। পরে ঘরের মধ্যে ঢুকে তার মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পান। তখন তার গলায় অনেক বড় ক্ষত ও শরীরের জামা কাপড় এলোমেলো থাকায় প্রমাণ হয় যে, তার মেয়েকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

কেএইচ/এনইউবি

বাংলাদেশ সময়: ০:৪৮:৪৪ ● ৫৪৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ