আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামের ধর্ষণ মামলার স্বাক্ষী দুই সহোদর মোঃ কাদের সরদার (৪০) ও জাহাঙ্গির সরদারকে (৩৫) ধর্ষণ মামলার আসামী দুই সন্তানের জনক মাহবুব ম্যালকার ও তার তিন সহোদর কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আহত দুই সহোদরকে স্বজনরা উদ্ধার বুধবার রাতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার বিকেলে।
জানা গেছে, উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামের এক গৃহবধুকে গত বছর ২৯ অক্টোবর দুই সন্তানের জনক মাহবুব ম্যালকার জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। ওই ঘটনায় গৃহবধু বাদী হয়ে মাহবুব ম্যালকার ও রিয়াজ ম্যালকার বিরুদ্ধে আমতলী থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওইদিনই মাহবুবকে গ্রেফতার করে। ওই মামলায় মাহবুব ৬ মাস জেল হাজতে ছিল। গত বছর ১৫ ডিসেম্বর পুলিশ এ মামলায় মাহবুবকে দোষী সাবাস্থ করে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। আগামী ১২ জুন বরগুনা নারী শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ওই মামলার স্বাক্ষীর দিন ধার্য্য রয়েছে । গত ২০ দিন পূর্বে উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে আসেন মাহবুব। জামিনে এসেই ওই মামলার স্বাক্ষী জাহাঙ্গির সরদার, কাদের সরদার ও মাঈনুদ্দিন সরদারকে তার বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দানে বিরত থাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে মাহবুব। কিন্তু স্বাক্ষীগণ আসামী মাহবুব ম্যালকারের কথায় রাজি হচ্ছে না। ধার্য্য তারিখে তাদের আদালতে স্বাক্ষী দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় মাহবুব। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহবুব ম্যালকার ও তার তিন সহোদর রিয়াজ ম্যালকার, আতাউল্লাহ ম্যালকার ও শহীদ ম্যালকার বুধবার বিকেলে স্বাক্ষী কাদের সরদার ও তার ভাই জাহাঙ্গির সরদারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পা, হাত, পেটে গুরুতর জখম করে। দ্রুত স্বজনরা দুই সহোদরকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সংঙ্কটজনক অবস্থায় তাদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওইদিন রাতেই তাদের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় স্বাক্ষী দুই সহোদরের বাবা আবুল সরদার বুধবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ আসামী আটকের চেষ্টা করছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজড়া বলেন, আহত কাদের সরদারের ডান পায়ে, রানে ও পেটে ও জাহাঙ্গিরের ডাত হাতসহ বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
আহত জাহাঙ্গির সরদার বলেন, মাহবুব ম্যালকার গত বছর ২৯ অক্টোবর আমার প্রতিবেশী এক গৃহবধুকে ধর্ষণ করে। ওই মামলায় মাহবুব ৬ মাস জেল হাজতে ছিল। ওই মামলায় আমরা তিন সহোদর স্বাক্ষী। গত ২০ দিন পূর্বে উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে এসে মাহবুব ম্যালকার ও তার তিন সহোদর আমাদের দিন সহোদরকে আদালতে স্বাক্ষী দেয়া থেকে বিরত থাকতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসছে । আমার ওর কথার রাজি না হওয়াতে আমাকে এবং আমার বড় ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
ধর্ষণ মামলার বাদী ওই গৃবহধু বলেন, আমার মামলায় যাতে আমার স্বাক্ষী কাদের সরদার, জাহাঙ্গির সরদার ও মাইনুদ্দিন সরদার আদালতে স্বাক্ষী দিতে যেতে না পারে সেই জন্যই মাহবুব ম্যালকার ও তার তিন সহোহদর তাদের কুপিয়ে জখম করেছে। তিনি আরো বলেন, আসামী মাহবুব ম্যালকার আমাকেও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাদের ভয়ে আমি ঠিকমত চলাফেরা করতে পারছি না।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। অভিযোগ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর