ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল শনিবার চতুর্থ দিনের মতো দেশের সব রুটে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হয়।
এদিন দেওয়া হয় আগামী ৩ জুনের টিকেট। অগ্রিম টিকেট পেতে কমলাপুর, বনানী, বিমানবন্দর, তেজগাঁও রেল স্টেশন ও ফুলবাড়িয়া পুরাতন রেলস্টেশনে কয়েকদিনের চেয়ে শনিবার (২৫ মে) মানুষের ভিড় আরো বৃদ্ধি পায়। অনেকে গত শুক্রবার ইফতার করে, কেউবা সেহরি করে টিকেট সংগ্রহের উদ্দেশে স্টেশনে হাজির হন। এদিকে শুক্রবার রাতে বৃষ্টির ফলে টিকেট বিক্রির প্লাটফর্মগুলোতে পানি কাদাসহ বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা জমে থাকে। এতে মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়।
এ ছাড়া ঈদের বাড়তি ভিড় মোকাবিলায় টিকেট সংগ্রহকারীরা নির্ধারিত সময়ের আগে থেকে অর্থাৎ ৯টার বদলে সকাল ৭টা থেকে টিকেট বিক্রি শুরু করার দাবি জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতি। এতে মানুষের ভোগান্তি কিছুটা কম বলে অভিমত তাদের। অন্যদিকে অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকেট সংগ্রহ করার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ জানায় অনেকেই। ২৬ তারিখ, রোববার দেওয়া হবে ৪ জুনের টিকেট। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকেট পাওয়া যাবে। অন্যদিকে আগামি ২৯ মে থেকে শুরু হয়ে ২ জুন পর্যন্ত চলবে রেলের ফিরতি টিকেট বিক্রি। ২৯ মে দেওয়া হবে ৭ জুনের, ৩০ মে দেওয়া হবে ৮ জুনের, ৩১ মে দেওয়া হবে ৯ জুনের, ১ জুন দেওয়া হবে ১০ জুনের ও ২ জুন দেওয়া হবে ১১ জুনের ফিরতি টিকেট।
এবারই প্রথম ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর, বনানী, তেজগাঁও স্টেশন এবং ফুলবাড়িয়া থেকে রেলের অগ্রিম টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। এবারে মোট ৭০ হাজার রেলের টিকেট বিক্রি হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এর অর্ধেক বিক্রি হবে অনলাইন ও অ্যাপে। তবে স্পেশাল ট্রেনের কোনো সিট মোবাইল অ্যাপে পাওয়া যাবে না। বাকি অর্ধেক টিকেট উপরোল্লিখিত রাজধানীর পাঁচটি জায়গা থেকে বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে ভিআইপি কোটা ৫ শতাংশ ও রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে ৫ শতাংশ টিকেট। সব মিলিয়ে স্টেশন থেকে সরাসরি মোট ২৮ হাজার টিকেট বিক্রি করা হবে। যদিও এখন পর্যন্ত অনলাইনে বা অ্যাপে রেলের টিকেট মিলছে না বলে অভিযোগ করছে যাত্রীরা।
ঈদুল ফিতরের অগ্রিম টিকেট বিক্রয় ও ব্যবস্থাপনায় টিকেট বিক্রয়ের রুটগুলো হচ্ছে : ঢাকা (কমলাপুর)-সমগ্র পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেন ভায়া যমুনা সেতু, বিমানবন্দর স্টেশন-চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তনগর ট্রেন, তেজগাঁও স্টেশন-ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী সব আন্তনগর ট্রেন, বনানী স্টেশন-নেত্রকোনাগামী মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেন, ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলভবন)-সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তনগর ট্রেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামি ৫ বা ৬ জুন দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে। তবে আগামি ৫ জুন ঈদ ধরে রেলওয়ের কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। কর্তৃপক্ষ জনিয়েছে, ঈদের পাঁচ দিন আগে থেকে অর্থাৎ ৩১ মে থেকে রেলওয়েতে ট্রেনের কোনো ডে-অফ থাকবে না। ফলে ৪৮টি বিশেষ ট্রিপ পরিচালিত হবে। ঈদকে কেন্দ্র করে টিকেট নিয়ে যেকোনো রকম কালোবাজারি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা, ঢাকা বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ সব বড় বড় স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ ও র্যাবের সহযোগিতায় টিকেটের কালোবাজারি প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়েছে। কালোবাজারি রুখতে ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখিয়ে একজন সর্বোচ্চ চারটি টিকেট কিনতে পারবেন। এ ছাড়া ঈদের আগে ও পরে মালবাহী ট্রেন বন্ধ থাকবে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এফএন/এমআর