ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
উৎপাদিত ধানের কাক্সিক্ষত মূল্য না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে পাকা ধানের ক্ষেতে আগুন দেওয়ার কারণ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলীয়ভাবেও এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২২ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। এখানে ঘটনাগুলো স্যাবোটাজ কিনা, কোনোভাবে এটা সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য কেউ বিষয়টা কৃষক সংকট উদ্ভব হয় কিন্তু এভাবে আগুন জ¦ালিয়ে ধানক্ষেতে, এসব ঘটনাগুলো বিশেষ বিশেষ জায়গায় ঘটছে কেন, এটা তদন্ত করে জানাতে বলেছেন। দলীয়ভাবেও আমরা খোঁজখবর নেব।
এবছর বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে ২৫ এপ্রিল থেকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে। সরকার এবার প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা এবং প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকায় কিনবে। কিন্তু গত কিছুদিন ধরেই ধানের দাম নিয়ে কৃষক পর্যায়ে চলছে অস্থিরতা। সরকার প্রতি মণ বোরো ধান ১০৪০ টাকায় কিনলেও কৃষক পাচ্ছে তার চেয়ে অনেক কম। দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, যেখানে ধান কাটার একজন শ্রমিককে দিতে হয় তার চেয়ে বেশি টাকা।
ধানের দাম নিয়ে অসন্তোষ থেকে পাকা ক্ষেতে কৃষকের আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে কোথাও কোথাও। কৃষকের খরচ বাঁচাতে অনেক জায়গায় শিক্ষার্থীরা, তরুণরা তাদের ধান কাটায় সহায়তা করছেন। সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগও কৃষকের ধান কাটায় সহযোগীতা করবে বলে জানিয়েছে। সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান করতে হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা সমস্যা হয়েছেৃআগুন জ¦ালিয়ে, ধান পুড়িয়ে এ সমস্যার সমাধান তো হবে না। সরকার এখানে আন্তরিক এবং সরকার কখনও চাইবে না আমাদের কৃষির মেরুদ- যে কৃষকেরা, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হোক। কৃষকদের স্বার্থবিরোধী, কৃষক বান্ধব সরকার কখনও করবে না। শেখ হাসিনা সরকার এ ব্যাপারে আন্তরিক। এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এখানে যে সমস্যার উদ্ভব হয়েছে, এর বাস্তব সম্মত সমাধানে উদ্যোগী সরকার। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কৃষকদের রক্ষায় অর্থমন্ত্রী চাল আমদানি সীমিত করার কথা কথা বলেছেন।
আর খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান কেনাসহ চাল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে।
এদিকে, ভারতের নির্বাচনে দেশটির জনগণ যে দল বা জোটকে নির্বাচিত করবে তাদের সঙ্গেই বাংলাদেশের সম্পর্ক থাকবে বলে মনে করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে তিনি বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাসের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় ঋণে অনেকগুলো প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। আবার নতুন নতুন প্রজেক্টও আমরা হাতে নিচ্ছি। কানেক্টিটিভির নতুন নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে। তিনি বলেন, ভারতে ইলেকশন হচ্ছে, একটু আলাপ-আলোচনা হয়েছে। ভারতের জনগণ যে দল বা জোটকে নির্বাচিত করবে, তাদের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক থাকবে। সরকার টু সরকার, পিপল টু পিপল যে যোগাযোগ ও সম্পর্ক আছে, যে জোট ও যে দলই আসুক না কেন জনগণের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। নির্বাচনের পর অমীমাংসিত সমস্যাগুলো আলোচনায় আসবে এবং সমাধানের ব্যাপারে ভারত সরকারের সহযোগিতা আশা করি অব্যাহত থাকবে।
নতুন সরকার তিস্তা পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান করবে বলে আপনি মনে করেন- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিটমহল হস্তান্তর যেভাবে হয়েছে, সীমান্ত সমস্যার বাস্তবায়ন যেভাবে হয়েছে, আমার মনে হয় তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান হবে। হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। আলোচনা চলছে, ভারতের নতুন সরকার এই আলোচনার বাস্তব রূপ দেবেন আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন এটিই আমরা আশা করি।
এফএন/এমআর