ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কর্ণফুলী, বালু, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদী নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান হয়েছে। শিগগির এসব নদী দখলমুক্ত করা হবে। ১০ বছরে দূষণমুক্ত করা হবে। দু-এক দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেখে মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন দেবেন।
সোমবার (২০ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা শেষে কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সম্পর্কিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ভূমি মন্ত্রণালয়ে টাকা চাওয়া হয়েছিল, ভূমি মন্ত্রণালয় টাকা দিয়েছে। আমরা ৫টি নদী ধরেছি। নদী এক দিনে দখল হয়নি। একশ’ বছর ধরে দখল হচ্ছে। বিদ্যুৎ প্লান্টও বসে গেছে নদীর পাড়ে। সেটিও সরিয়ে নেওয়া হবে। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ভালো ভাবে চলছে। ভাবনার কিছু নেই। চট্টগ্রাম বন্দর প্রথম অগ্রাধিকার। পর্যায়ক্রমিকভাবে সব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে।
নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নকে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বে টার্মিনালের কার্যক্রম থেমে নেই। যদিও দৃশ্যমান হয়নি এখনো। ১৩২ বছরের পথচলা বন্দরের। আমরা বিশ্বের বন্দরগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে যেতে চাই। এটি প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতার জন্য অনেক পরিকল্পনা নিয়েছেন। এগুলো বাস্তবায়নে বন্দর সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ যদি সেই কাজ এগিয়ে নিতে দেখি সেটা আমাদের প্রশান্তি। বন্দরে চেন অব কমান্ড থাকতে হবে। সিবিএ নেতারা সব অনুষ্ঠানে থাকতে হবে না। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক থাকবেন। বন্দরের কর্মীরা আমাদের সম্পদ। বন্দর চেয়ারম্যান আপনাদের যৌক্তিক দাবি পূরণে সচেষ্ট। আমাদের নজরদারি, আন্তরিকতা ও ভালোবাসা আছে। তিনি বলেন, আমার কাজ আমি করবো। দেশের প্রতি দায়িত্ব আছে এটা মনে রাখলে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হবে। সেই লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করতে হবে।
এসডিজির লক্ষ্য ২০৩০ সালের আগেই পূর্ণ করবো। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের জন্য যারা শহীদ হয়েছেন-স্বাধীন দেশে তারা অক্সিজেন নিতে পারেননি। আমাদের দায়িত্ব বেশি। অন্তরাত্মাকে জিজ্ঞেস করতে হবে। পরিবার, সন্তানের মতো দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করতে হবে। দুর্বলতা জয় করতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্রের পূজারী ছিলেন। তিনি গণতন্ত্রকে ধারণ করতেন। তার উদারতার সুযোগ নিয়ে লেবাসধারীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রামের মাটিতে ভাটিয়ারির প্যারেডে জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন অনাচার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। পঁচাত্তরের পর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চেয়েছিল লেবাসধারীরা।
১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী ছিলেন শাহ কিবরিয়া, তাকে হত্যা করা হয়েছে। চট্টগ্রামে গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীকে হত্যা করা হয়েছিল, বাঁশখালী হত্যাকা- হয়েছিল। সিরিজ বোমা হামলা হয়েছে, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করার জন্য। সভায় হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নৌ প্রতিমন্ত্রী বন্দরের কার্যক্রমে নজরদারির জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান।
সভা শেষে তিনি বন্দরের জেটি, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, বে টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।
এফএন/এমআর