ইঞ্জিন ও পাওয়ার কার সঙ্কট ঈদে রেলযাত্রায় বিড়ম্বনা বাড়াতে পারে

প্রথম পাতা » জাতীয় » ইঞ্জিন ও পাওয়ার কার সঙ্কট ঈদে রেলযাত্রায় বিড়ম্বনা বাড়াতে পারে
সোমবার ● ২০ মে ২০১৯


ইঞ্জিন ও পাওয়ার কার সঙ্কট ঈদে রেলযাত্রায় বিড়ম্বনা বাড়াতে পারে

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

ইঞ্জিন ও পাওয়ার কার সঙ্কট আসন্ন ঈদে রেলযাত্রায় বিড়ম্বনা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ প্রতি বছরই ঈদের সময় অতিরিক্ত সার্ভিস চালুর পাশাপাশি ট্রেনে বাড়তি কোচ সংযোগ করা হয়। আর তা করতে গিয়ে রেলওয়ে কোচ ও ইঞ্জিন সংকটে পড়ে। কিন্তু এবার কোচ ও ইঞ্জিনের পাশাপাশি পাওয়ার কার নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে রেলওয়ে। বর্তমানে রেলওয়ের বহরে থাকা কোচগুলো দিয়ে অধিকসংখ্যক সার্ভিস পরিচালনার সুযোগ থাকলেও ইঞ্জিনের অভাবে তা ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঈদে যাত্রীর চাপ বেড়ে গেলে রেলের ইঞ্জিনগুলো টানা এক সপ্তাহ বিশ্রাম পায় না। ফলে অনেক সময় ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাত্রা বিলম্বিত এবং শিডিউল বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রেলের পরিবহন বিভাগ আসন্ন ঈদে রেলযাত্রায় কোচ ও ইঞ্জিন সঙ্কটের পাশাপাশি পাওয়ার কার নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে। কারণ গরমের কারণে এবার ট্রেনে বৈদ্যুতিক পাখা ও এসির ব্যবহার বেড়ে যাবে। তাছাড়া ট্রেনগুলোয় স্ট্যান্ডার্ড কম্পোজিশনের চেয়েও অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের ফলেও পাওয়ার কারের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। ফলে যাত্রাপথে যেকোনো সময় পাওয়ার কার বিকল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে পাওয়ার কারের সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যে রেলের উভয় অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক, প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী, প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী ও বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজারদের রেলভবন থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনায় এয়ারকন্ডিশনড কোচগুলোর এসি সচল রাখা এবং পথিমধ্যে পাওয়ার কার বিকল হওয়া থেকে রক্ষা করতে ঈদের আগেই বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তারপরও কোনো পাওয়ার কার নষ্ট হয়ে গেলে পথিমধ্যে প্রতিস্থাপনের সুযোগ রাখতে বিভিন্ন সেকশনে স্পেয়ার পাওয়ার কার রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রতি বছর রোজা এলেই রেলওয়ের পক্ষ থেকে ঘটা করে বাড়তি কোচ সংযোজনের ঘোষণা দেয়া হয়। তবে কয়েক বছর ধরে বাড়তি কোচ সংযোজনের বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় এবার ঘোষণা দেয়া হয়নি। যদিও এবার পূর্বাঞ্চলে বিদ্যমান ট্রেনগুলোয় প্রায় ৮০টি এবং পশ্চিমাঞ্চলে ৩০টি কোচ সংযোজন করবে রেলওয়ে। সেক্ষেত্রে ঈদের আগে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ট্রেন সার্ভিস বন্ধ রেখে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস হিসেবে চালানো হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে বিগত ৯ মে ঈদ-পূর্ব ও পরবর্তী স্বাভাবিক এবং বিশেষ ট্রেন সার্ভিস পরিচালনায় একটি বৈঠক করে। বৈঠকে স্বাভাবিক ট্রেন সার্ভিসের পাশাপাশি সারা দেশে ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের প্রস্তাব করা হয়। তবে ইঞ্জিন সংকটের কারণে ওসব সার্ভিস নির্বিঘেœ চালানো যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, পূর্বাঞ্চল রেলের ১৫০টি ইঞ্জিনের মধ্যে প্রতিদিন ১১১টির চাহিদা থাকলেও নিয়মিত পাওয়া যায় ১০০ থেকে ১০৩টি। রেলওয়েকে প্রতিদিন প্রায় ১০টি ইঞ্জিন ঘাটতি রেখে ট্রেন পরিবহন ব্যবস্থাপনার শিডিউল ঠিক করতে হয়। বহরে থাকা ১৫০টির মধ্যে মাত্র ৪৭টি ইঞ্জিন অর্থনৈতিক আয়ুষ্কালের মধ্যে আছে (২০ বছর)। তাছাড়া ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩৪টি এবং ৩০ বছরের অধিক বয়সী ইঞ্জিন রয়েছে ৬৯টি। অর্থাৎ পূর্বাঞ্চল রেলের মোট ইঞ্জিনের ১০৩টিই মেয়াদোত্তীর্ণ। তাতে করে যাত্রীবাহী ট্রেনের শিডিউল কোনো রকমে ঠিক রাখা হলেও রেলের জন্য লাভজনক মালবাহী ট্রেনগুলো বসিয়ে রাখা হয়। পশ্চিমাঞ্চলে ১২৪টি ইঞ্জিন থাকলেও নিয়মিত সর্বোচ্চ ১০০টি পাওয়া যায়। পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ ইঞ্জিন মেয়াদোত্তীর্ণ থাকায় বিভিন্ন সময় নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে না পারাসহ পথিমধ্যে ইঞ্জিন বিকল হয়।
এদিকে এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ ওমর ফারুক কোনো মন্তব্য না করলেও পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা এমএম শাহনেওয়াজ জানান, ঈদে কোচ ও ইঞ্জিনের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। এবারো যাত্রীদের সুবিধার্থে ৩০টি কোচ সংযোজন করা হবে। তবে ঈদে যাত্রী চাহিদা বাড়লেও রেলের সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:০২:৪৬ ● ৩৭২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ