জাহিদ রিপন, সাগরকন্যা রিপোর্ট॥
চলতি বছরের জুলাই মাসে ২৬৪০ মেঘাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টার্মিনাল ব্যবহারের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে দেশের তৃতীয সমুদ্র বন্দর পায়রার অপরেশনাল কার্যক্রম। বর্তমানে চলছে বন্দরের মধ্য মেয়াদী উন্নয়ন কার্যক্রম। কার্যক্রমের অংশ হিসাবে তিন হাজার নয়’শ বিরাশি কোটি টাকা ব্যায়ে পায়রা বন্দরের সংযোগ সড়ক, অন্ধারমানিক নদীর উপড় সেতু, সাড়ে ছয় মিটার দীর্ঘ জেটিসহ একটি টার্মিনাল এবং পিপিপি অর্থায়নে ক্যাপিটাল এন্ড মেইনটিন্যান্স ড্রেজিং ও ড্রাই বাল্ক/কোল্ড টার্মিনাল এবং ভারতীয় ঋন সহায়তায় মাল্টিপারপাস টার্মিনাল প্রকল্প ২০২১ সালে মধ্যে সমাপ্ত হলে পায়রা বন্দরের পুর্নাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হবে। শনিবার বেলা এগারটায় পায়রা বন্দরে এক প্রেসব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বন্দর চেয়ারম্যান কমোডর জাহাঙ্গীর আলম।
বন্দর চেয়ারম্যান আরো জানান, বন্দরের মুল চ্যানেলের রাবনাবাদ পয়েন্টের গভীরতা সাড়ে দশ মিটারে উন্নীত করতে বেলজিয়াম ভিত্তিক আর্ন্তজাতিক ড্রেজিং কোম্পানী ’জান ডি নুল’ কাজ শুরু করছে। প্রায় ৮হাজার ২শ’ ৯৮ কোটি ব্যায়ের এ প্রকল্পটিও ২০২১ সালে সমাপ্ত হবে। এছাড়াও ভারতের লাইন আব ক্রেডিট-৩ এর আওতায় ৫হাজার ১৫০কোটি টাকা ব্যয়ে অভ্যান্তরীন সংযোগ সড়কসহ ১২শ’ মিটার একটি মালটিপারপাস টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে। পিপিপি’র আওতায় ২হাজার ১২৫কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রাই বাল্ক/কোল্ড টার্মিনালসহ অনুরূপ আরো ২টি টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে।
ইতোমধ্যে সমাপ্ত বন্দরের বিভিন্ন কার্যক্রমের চিত্র উল্ল্যেখ করে বন্দর চেয়ারম্যান জানান,স্বল্প মেয়াদে বন্দরের প্রাথমিক কার্যক্রম চালু করতে নিরাপত্তা ভবন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ১০০ কেভিএ ক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, ভিএইচএফ টাওয়ার, প্রশাসনিক ভবন, ওয়ার হাউজ, মাল্টিপারপাস, স্ঠাফ ডরমেটরি, সার্বিস জেটিসহ সংযোগ নদীর ড্রেজিং ও মার্কিং বয়া স্থাপন সম্পন্ন করা হয়েছে। বন্দর পরিচালনার অপরিহার্য জলজান পাইলট ভ্যাসেল, হেভি ডিউটি স্পিড বোট, টাগ বোট, বয়া লেইং ভ্যাসেল এবং জরিপ বোট র্নিমান কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয মহা সড়কের সাথে স্থল সংযোগের জন্য চার লেন বিশিস্ট শেখ হাসিনা সড়ক র্নিমান কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
বন্দরের জন্য সাড়ে ছয় হাজার একর ভ’মি অধিগ্রহনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে আতœনির্ভরশীসহ বাসস্থান নিশ্চিত করা নিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ১৫৫টি ট্রেডে পরিবার থেকে একজন করে চার হাজার দু’শ পরিবারকে প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে।
বন্দরের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তুলে ধরে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, সীমিত কার্যক্রমে এ পর্যন্ত বন্দরে আগত ২৬টি জাহাজ থেকে বিভিন্ন খাতে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে পঞ্চাশ কোটি টাকা। আর বন্দর আয় করেছে সাড়ে তিন কোটি টাকা। রেলপথ, বিমান পথ, ডক ইয়ার্ড, শীপইয়ার্ড, ইকোটুরিজম, এলএনজি টার্মিনাল, লিক্যুইড বাল্ক টার্মিনালের কাজ র্নিমান করে ২০২৫ সাল নাগার একটি পুর্নাঙ্গ ও গভীর সমুদ্র বন্দরে রূপ নেবে পায়রা। যা দেশের তৃতীয় অর্থনৈতিক করিডোর হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাবে।
এসময় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার গনমাধ্যম কর্মী ছাড়াও বন্দরের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।