সহজ কাজ না হলেও আমাদেরকে পথ বের করতে হবে: ফখরুল

প্রথম পাতা » রাজনীতি » সহজ কাজ না হলেও আমাদেরকে পথ বের করতে হবে: ফখরুল
শুক্রবার ● ১০ মে ২০১৯


ঢাকায় এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনে ফখরুল

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

ভবিষ্যতে দলের নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে বিএনপির তরুণ-যুবাদের কঠোর সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১০ মে) ঢাকায় এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে। হতাশ হলে চলবে না। আমাদেরকে প্রতিটি সুযোগ নিতে হবে, আমাদেরকে পথ বের করতে হবে। মনে রাখতে হবে- এটা সহজ কাজ নয়।
বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্নভাবে ‘বিভ্রান্তি সৃষ্টি’ করা হচ্ছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, আমি বলতে চাই, আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে দল পরিচালনা করছেন। আর তার নির্দেশে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক রাজনীতির দিকে যাব। তরুণদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি সুস্থ নই। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের সময় তো শেষ হয়ে আসছে। এখন যারা সামনে আসবেন, তাদের শুধু রাজনীতি নয়, এই বাংলাদেশকে বাঁচাতে কাজ করতে হবে। এখানে যারা আছি, আমরা দীর্ঘকাল ধরে কাজ করছি। তাই আমাদের বয়স হয়েছে এবং আমরা বৃদ্ধ হয়েছি। আর এখন আপনাদের সময়। আপনারা এগুলো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি ‘অকার্যকর রাষ্ট্রে’ পরিণত করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে কি থাকবে না, বাংলাদেশ নিজস্ব মর্যাদায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কি পারবে না এবং বাংলাদেশ নিজের পায়ের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কি পারবে না- আজকে সেই প্রশ্ন এসে দাঁড়িয়েছে।
নবীন কর্মীদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দেন ফখরুল। বেগম জিয়া যখন রাজনীতিতে আসেন, তখন বাংলাদেশ একটা স্বৈরাচার শাসকের কবলে পড়েছিল। শুধু স্বৈরাচার শাসনই ছিল না, অত্যন্ত সুচারুভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বএবং দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করবার নতুন একটা প্রক্রিয়া ও প্রচেষ্টা ছিল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার পরে স্বৈরাচার এরশাদের রাজনীতিতে আগমন, এটা একই সূত্রে গাঁথা ছিল। সুতরাং এটাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার উপায় নেই। তখনও বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত’ ছিল মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, সেই চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়ে সেই দলটিকে বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়ে এসেছিলেন। এটা তার জীবনে ও বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা বড় অধ্যায়।
এদেশে বেগম জিয়াকে বিভিন্নভাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়। তবে আমরা মতে, এশিয়ায় তার মত গণতন্ত্রকামী ত্যাগী নেত্রী খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে। ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা আর কোনো রাজনীতিবিদ করেননি। তিনি সত্যিকারার্থে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করার মাধ্যমে খালেদা জিয়া সেই কাজ শুরু করেছিলেন। দেশের বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। বর্তমান সরকার দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সাবেক সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির স্ত্রী। তিনি রাজনীতি করে জেল খেটে এত কষ্ট না করে সারা জীবন আরাম-আয়েশের জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে রাজনীতিতে এসেছেন। খালেদা জিয়া দেশকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে নারীশিক্ষাসহ প্রতিটি সেক্টরে কাজ করেছেন। দলীয় প্রধান হিসেবে খালেদা জিয়ার তিন যুগপূর্তি উপলক্ষে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন হয়। খালেদা জিয়ার বিভিন্ন সময়ের শতাধিক আলোকচিত্র সেখানে স্থান পায়।
অনুষ্ঠানে ‘ত্যাগ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ। সংগঠনের পরিচালক বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে ও ছাত্র দলের আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৮:৪৩ ● ৪৭২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ