জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেলেন জিএম কাদের

প্রথম পাতা » রাজনীতি » জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেলেন জিএম কাদের
রবিবার ● ৫ মে ২০১৯


জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেলেন  জিএম কাদের

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

মধ্যরাতে সাংবাদিকদের ডেকে ছোট ভাই জিএম কাদেরকে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
শনিবার রাত ১১টার দিকে ঢাকার বারিধারায় নিজের বাসভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। এরশাদ বলেন, তার অবর্তমানে দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব তার ছোট ভাই জিএম কাদের পালন করবেন। শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি এখন অনেক সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। সে কারণে তিনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত জিএম কাদেরই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
নব্বই ঊর্ধ্ব এরশাদ বসেছিলেন হুইল চেয়ারে, প্রথমে তার কথাও শোনা যাচ্ছিল না একটু সামনে থেকেই। পরে সাংবাদিকদের অনুরোধে শব্দ করে লিখিত বক্তব্য পড়েন তিনি। তাও শেষ করতে পারছিলেন না। তখন পাশ থেকে জিএম কাদের বক্তব্যের বাকি অংশ পড়ে শোনান। গত মাসেই জিএম কাদেরকে দলে তার উত্তরসূরি ঘোষণা করে বিবৃতি দিয়েছিলেন এরশাদ। কয়েক মাস ধরে অসুস্থ এরশাদ এরমধ্যে দুই দফায় সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। দেশে ফেরার পরও তেমন একটা প্রকাশ্যে আসেননি।
সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে দলীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার আগে গত ১ জানুয়ারি প্রথম জাতীয় পার্টিতে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে ভাই কাদেরের নাম ঘোষণা করেছিলেন এরশাদ। এরপর এরশাদের অনুপস্থিতিতে জি এম কাদের দায়িত্বভার গ্রহণের পর ‘রওশনপন্থি’ বলে পরিচিত নেতারা নাখোশ মনোভাবও দেখান বিভিন্ন সভায়। সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদের দলে জি এম কাদেরের উপরে জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যানের পদে রয়েছেন তার স্ত্রী রওশন এরশাদ। রওশনের সঙ্গে কাদেরের বিবাদ জাতীয় পার্টির মধ্যে বরাবরই আলোচিত। সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পর ২২ মার্চ দলে ‘বিভেদ’ তৈরি ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে ‘ব্যর্থতার’ অভিযোগ তুলে জি এম কাদেরকে কো চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেন এরশাদ। পরদিন সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতার পদ থেকেও কাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সংসদের উপনেতা করা হয় রওশনকে। এরপর সপ্তাহ দুয়েক না হতেই বিগত ৪ এপ্রিল জিএম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যানের পদ ফিরিয়ে দেন এরশাদ। দুদিন বাদে এক ‘সাংগঠনিক নির্দেশে’ তাকে আবার দলের ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যানও ঘোষণা করেন। ওই ঘোষণার পর জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে কয়েকজন সিদ্ধান্ত পাল্টাতে এরশাদকে প্রভাবিত করার জন্য বেশ তোড়জোড় শুরু করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন কাদেরের সমর্থকরা। ওই পক্ষের নেতারা যাতে এরশাদের কাছে ঘেঁষতে না পারেন সেজন্য তার বাড়ির সামনে পাহারাও বসান তারা। সে সময় জিএম কাদেরের সমর্থক হিসেবে পরিচিত দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাক কয়েকজন নেতার নামও বলেছিলেন। রুহুল আমিন হাওলাদার, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সুনীল শুভ রায় ও খালেদ আখতারসহ কয়েকজন কাদেরের বিরুদ্ধে ‘উঠেপড়ে লেগেছিলেন’ বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। সে সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেছিলেন, জি এম কাদের চেয়ারম্যান হবেন, এটা আমিও চাই। তবে এই যে পরিবর্তন, সেটা সবার ভোটে হোক না কেন, তাহলে ওনার গ্রহণযোগ্যতা কর্মীদের মাঝে বাড়বে। তবে কাউন্সিলের আগেই ছোট ভাই জিএম কাদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করলেন এরশাদ।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:১৬:৩৫ ● ৩৬৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ