বানারীপাড়া (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ঘুর্ণিঝড় ফনির অগ্রভাগ বাংলাদেশে প্রবেশ করায় বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীর পানি তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপশি ঝড়ে গাছ পড়ে বেশ কিছু কাঁচা ঘর-বাড়ি সহ বিদ্যুতের খুটি ও ক্রোস আর্ম ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপশি অর্ধশতাধিক স্পটে তার ছিড়ে ব্যাপক কক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ঝড়ে চলতি বোর মৌসুমে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাকা ও আধাপাকা বোর ধান নুয়ে পরেছে। তবে এ ব্যাপারে এখনও কোন ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করতে পারেনি উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
জানা গেছে এ উপজেলার বেশির ভাগ গ্রাহক গ্রামীণ ফোন ব্যাবহার করেণ। এক্ষেত্রে পৌর শহরে বিদ্যুৎ না থাকলেই সোনালী ব্যাংক (আরকে) ভবনের ছাদের ওপর গ্রামীন ফোনের টাওয়ারটির আইপিএস বিকল হয়ে পড়ায় গ্রাহকদের মোবাইল ফোনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে বন্দর বাজারের ব্যাবসায়ী (বিকাস) কমল কান্তি বলেন এর আগেও ঘর্ণিঝড় সিডরের সময় একটানা ১০ দিন ধরে বিদ্যু বিপর্যায় হলেও গ্রামীণ ফোনের টাওয়ার বন্ধ হয়নি। ওই সময় সংস্লীষ্ট কর্তৃপক্ষ সোনালী ব্যাংকের সামনে জেনারেটর দিয়ে গ্রামীণ ফোনের টাওয়ার চালু রেখে ছিলেন। এখন সেখানে একটু বিদ্যুৎ না থাকলেই পৌর শহরের গ্রাহকরা ওই ফোনে আর প্রবেশ করতে পারছেন না। ফলে গ্রাহকরা চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংস্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্শন করছেন।
এদিকে বিদ্যুৎ বিপর্যায়ের ব্যাপারে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বানারীপাড়া সাব জোনাল অফিসের এজিএম মঞ্জুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফনির কারণে এ উপজেলার বিভিন্ন স্পটে গাছ ও ডাল পড়ে পল্লী বিদ্যুতের ২টি খুটি, ৫টি ক্রোস আর্ম ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপশি ১৫টি ফিউজ পুড়ে যায় এবং অর্ধশতাধিক স্পটে তার ছিড়ে যায়। একারণে শুক্রবার রাত ১১টার পর থেকে শনিবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত পৌর শহরে বিদ্যুৎ সর্বারাহ বন্ধ ছিল। আমরা ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় বিদ্যুৎ পেলেও বিদ্যুৎ লাইন ছেড়া সহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান করে বেলা আড়াইটায় সুধু মাত্র পৌর শহরে বিদ্যুৎ লাইন চালু দিতে পেরেছি। এছাড়াও উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ লাইন চালু করতে পারিনি। ওই বিদ্যুতের লাইন সংস্কার করে পর্যায়ক্রমে সে এলাকায় বিদ্যুৎ সরর্বারাহ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বিদ্যুৎ বিপর্যায়র কারণে উপজেলা সদরের সাথে মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি অফিসারদের মোবাইল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বোর ও সব্জীর ক্ষয়-ক্ষতি নির্ধারণ করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
অপরদিকে শক্রবার দুপুরে বানারীপাড়া-বরিশাল সড়কে গাছ পড়ে প্রায় দু’ঘন্টা ধরে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকার পাশাপশি শনিবার সকালে দূরপাল্লার পরিবহন ও খেয়া চলাচল সাময়ীক ভাবে বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ্ সাদীদ জানান, ঘুর্ণিঝড় ফনি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকার ও যুকীপূর্ণ বসতিদের ২১টি সাইক্লোন সেল্টার, স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা সহ নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার পাশাপশি সর্বত্র সতর্কবস্থা জারী করে বলানটিয়ার হিসেবে জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন, স্কাউট ও চকিদারদের দায়ীত্ব পালন করার নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে একটি কন্টোল রুম চালু করা হয় বলেও ইউএনও জানান।