ঘূর্ণিঝড় ফণী : সারাদেশে নিহত ৭

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » ঘূর্ণিঝড় ফণী : সারাদেশে নিহত ৭
শনিবার ● ৪ মে ২০১৯


ঘূর্ণিঝড় ফণী: ঝড়ো হাওয়ায় সারাদেশে নিহত-৭

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে দুর্বল হয়ে ঢোকার পরও বিভিন্ন জেলায় ঝড়ে গাছ ভেঙে ও ঘরচাপা পড়ে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বরগুনায় দাদি-নাতি, নোয়াখালীতে দুই শিশু, ভোলায় এক নারী, লক্ষ্মীপুরে এক বৃদ্ধ আর পটুয়াখালীতে নিহত হয়েছেন এক তরুণ। এছাড়া এসব জেলায় সহস্রাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
বরগুনা: ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়ার খাল এলাকায় ঘরের নিচে চাপা পড়ে দাদি ও নাতির মৃত্যু হয়েছে। মৃত নুরজাহান বেগম (৬০) কালিয়ার খাল এলাকায় আবদুল বারেকের স্ত্রী ও তার নাতি জাহিদুল ইসলাম (৮)। এছাড়া ঝড়ে ঘরের মধ্যে চাপা পড়ে নোয়াখালীর চর আমানউল্লাপুর ইউনিয়নে একজন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয়রা। এতে বিভিন্ন ইউনিয়নে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
নোয়াখালী: নোয়াখালীতে ঝড়ে নিহত হয়েছে দুই শিশু। এ ছাড়া পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে চার শতাধিক ঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। সুবর্ণচর উপজেলা নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইকবাল হাসান জানান, ভোরের দিকে ঘরচাপা পড়ে চরওয়াপদা ইউনিয়নের চর আমিনুল হক গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে মো. ইসমাইল (২) নিহত হয়। একই সময় চরজব্বর ইউনিয়নে অন্তত ৩০ জন আহত হন। তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ছাড়া চরওয়াপদা ও চরজব্বর ইউনিয়নে ঝড়ে গাছপালা ও শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
ভোলা: ভোলায় ঘরচাপা পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। আর শুধু সদর উপজেলায় দুই শতাধিক বাড়িঘর বিধস্ত হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন জানান, শনিবার সকালে দক্ষিণ দিঘলদি এলাকায় ঝড়ে ঘর ভেঙে পড়লে রানী বেগম (৪৫) নামে এই নারী চাপা পড়ে নিহত হন।
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে নিহত হয়েছেন এক বৃদ্ধ। আহত হয়েছে ১০ জন। বিধ্বস্ত হয়েছে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি। রামগতি উপজেলা র্নিবাহী র্কমর্কতা (ইউএনও) রফিকুল হক বলেন, ঘরচাপায় চরআলগী ইউনিয়নের নেয়ামতপুর এলাকায় বেয়াইবাড়ি বেড়াতে এসে আনোয়ারা বেগম (৭৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। ঝড়ে রায়পুর ও রামগতিসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। মেঘনার পানির উচ্চতা চার-পাঁচ ফুট বেড়ে যাওয়ায় জেলার রামগতি, কমলনগর, সদর ও রায়পুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
পটুয়াখালী: পটুয়াখালীতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। পটুয়াখালীর কুয়াকাটার মনসাতলী এলাকায় গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আহত হন মোটরসাইকেল আরোহী হাবিবুর রহমান মুসুল্লি (২৫) নামে এই তরুণ। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তানভীর রহমান বলেন, গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আহত হলে হাবিবকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান। হাবিব কুয়াকাটা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ওরকা পল্লীর বাসিন্দা হারুন মুসুল্লির।
এ দুর্ঘটনায় আরও দুই জন আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। কুয়াকাটা পৌরমেয়র আবদুল বারেক মোল্লা বলেন, হাবিব মোটরসাইকেলে করে যাত্রী বহন করেন। যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ বাতাসের তীব্রতায় একটি রেইনট্রির ডাল ভেঙে পড়লে তারা আহত হন।
চাঁদপুর: চাঁদপুরে দেড় শতাধিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, শিলারচর, খাসকান্দি, মান্দের বাজার গ্রামের অর্ধশতাধিক মানুষের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বহু গাছ-পালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় পাঁচজন আহত হলেও তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৬:৩২ ● ৭৯৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ