কলাপাড়া হাসপাতালে দু’জন চিকিৎসকই ভরসা, স্যালাইন সংকট

প্রথম পাতা » সর্বশেষ » কলাপাড়া হাসপাতালে দু’জন চিকিৎসকই ভরসা, স্যালাইন সংকট
বৃহস্পতিবার ● ২ মে ২০১৯


কলাপাড়া হাসপাতালে  চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

তিন বছরের নাজিয়াকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেছেন স্বজনরা। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ছোট্ট নাজিয়া। নানি খাদিজা বেগম রাত সাড়ে আট টায় জরুরি বিভাগে এসে জানালেন নাতির পেটের ব্যথা কিংবা বাইরে যাওয়া (পায়খানা) কমছেনা। খাদিজা বেগম আরও জানালেন সন্ধ্যা থেকে এপর্যন্ত তাকে ৭৫০ টাকার ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। যার মধ্যে স্যালাইনও রয়েছে।
রফিক হাওলাদার ও সেলিনা আক্তার দম্পতিও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অবস্থায় সন্ধ্যায় হাাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উভয়কে ফ্লোরে রেখে স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। রফিক হাওলাদার জানালেন, এ পর্যন্ত ২৩০০ টাকার ওষুধ বাইরে থেকে কিনেছেন। দায়িত্বরত নার্স জানালেন কলেরা স্যালাইনসহ অসংখ্য ওষুধ রয়েছে। তবে যে পরিমান ডায়রিয়ার রোগী বাড়ছে তাতে দুই দিন পরে স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দিবে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দেয়া তথ্যানুসারে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার রাত আট টা পর্যন্ত মোট ৫৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে ১৮ জন ডায়রিয়ার। আর রবিবার রাত ১২ টা থেকে ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হওয়া ৭৫ জন রোগীর মধ্যে ডায়রিয়ার রোগী ১৯ জন। এভাবে ক্রমাগত ডায়রিয়ার রোগী বাড়ছে। শিশু-কিশোর থেকে যুবক, বয়োবৃদ্ধ সব ধরনের রোগী রয়েছে যারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। বর্তমানে শয্যা সঙ্কটে রোগীদের ফ্লোরে থাকতে হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে রোগীর রোগ সারানোর চেয়ে আরও বেশি কাহিল হয়ে পড়ছেন। একেতো শয্যা সঙ্কট। তার উপরে ঠিকমতো ওষুধ মিলছেনা। মাত্র দুই জন চিকিৎসক। আউটডোরে প্রায় তিন শ’ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। এসব সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
বর্তমানে বহুবিধ সমস্যায় কলাপাড়ায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হতাশ হয়ে পড়ছেন। এরই মধ্যে এক শ্রেণির ক্লিনিক মালিকরা তাঁদের নির্দিষ্ট চিকিৎসক দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন চিকিৎসার নামে। করাচ্ছেন অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। জরুরি ভিত্তিতে সরকারের চিকিৎসা সেবা সচল রাখতে চিকিৎসক পদায়ন করা হোক। এছাড়া ফ্রি-সরকারি ওষুধ রোগীদের সরবরাহ করা প্রয়োজন। নইলে চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়ছে ক্রমশ। চিকিৎসা বঞ্চিতের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারের চিকিৎসা সেবা ভেস্তে যেতে বসেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক চিন্ময় হাওলাদার জানান, বর্তমানে চিকিৎসক সঙ্কটে চিকিৎসা সেবা সচল রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও শতভাগ সদিচ্ছা নিয়ে সাধ্যমতো রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

এমইউএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৮:৪৭ ● ৪৬৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ