ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় প্রস্তুত উপকূলবাসী

প্রথম পাতা » আবহাওয়া » ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় প্রস্তুত উপকূলবাসী
বৃহস্পতিবার ● ২ মে ২০১৯


---

আমতলী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় প্রস্তুত আমতলী-তালতলীর উপজেলার উপকূলীয় এলাকার ৫ লক্ষাধীক মানুষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুই উপজেলায় ১’শ ৪৫ টি সাইক্লোন সেল্টার। উপকূলীয় মানুষ ও জেলেদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য কাজ করছে দুই হাজার ৫’শ ২০ জন সেচ্ছাসেবী। ইতিমধ্যে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মৎস্যজীবীরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে।
জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড় ফণী পায়রা সমূদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে আমতলী- তালতলীর উপকূলীয় এলাকায় গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে উপকূলের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে। ফণী মোকাবেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আমতলী ও তালতলীতে মানুষ সচেতনতার জন্য মাইকিং ও সতর্কীকরন সংকেত পতাকা উত্তোলন এবং সাগর ও তৎসংলগ্ন নদ-নদীতে চলাচলরত সকল প্রকার মাছ ধরা ট্রলার ও নৌযানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য আমতলীতে এক হাজার ৬’শ ৫০ ও তালতলীতে ৮’শ ৭০ জন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর সেচ্ছাসেবীরা কাজ করছে। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহির ও চরাঞ্চল এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুই উপজেলায় ১’শ ৪৫ টি সাইক্লোন সেল্টার।
বৃহস্পতিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, তালতলী উপজেলার বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন আশারচর, খোট্টারচর, নিদ্রাসকিনা, ফকিরহাট, বালিয়াতলী, জয়ালভাংঙ্গা, তেতুঁলবাড়িয়া, নিউপাড়া, চরপাড়া, গাবতলী, ছোটবগী, পচাঁকোড়ালিয়া, আমতলী উপজেলার পশুরবুনিয়া, লোচা, ফেরীঘাট, আমুয়ারচর, বৈঠাকাটা, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালীর নাইয়াপাড়া ও হরিদ্রাবাড়িয়া এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অনেক মানুষ নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। উপকুলীয় এলাকার সকল মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকা তীরে ফিরে এসেছে।
তালতলীর তেতুঁলবাড়ীয়া এলাকার জেলে বাবুল হাওলাদার, সেলিম মিয়া, আসাদুল, হিরন হাওলাদার ও রুবেল জানান, বইন্যার খবর পাইয়্যা মোরা নাও জাল লইয়্যা বাড়তে আইছি। সিডরের নাহান ভুল আর হরমু না।
তালতলী ট্রলার মালিক সমিতির সদস্য মোঃ আলমগীর হোসেন হাওলাদার বলেন, বন্যার খবর শুনে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নদ-নদীর সকল মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকা তীরে অবস্থান করছে।
তালতলীর ফকিরহাট মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ আবদুস ছালাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর খবর পেয়ে বঙ্গোপসাগরের সকল মাছ ধরা নৌকা এবং চরের জেলেরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
আমতলী ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী (রেড ক্রিসেন্ট) কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আছাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় মাইকিং, প্রচার -প্রচারনা করে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ জন্য মাঠে কাজ করছে দুই হাজার ৫’শ ২০ জন সেচ্ছাসেবক। তিনি আরো বলেন, উপকূলীয় মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১’শ ৪৫ টি সাইক্লোন সেল্টার।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ করছে সেচ্ছাসেবীরা। তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় নিয়ন্ত্রন কক্ষ খোলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৮:১১ ● ৬৬৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ