উৎপাদনে আসছে আরো ৭ বিদ্যুৎকেন্দ্র

প্রথম পাতা » জাতীয় » উৎপাদনে আসছে আরো ৭ বিদ্যুৎকেন্দ্র
মঙ্গলবার ● ৩০ এপ্রিল ২০১৯


উৎপাদনে আসছে আরো ৭ বিদ্যুৎকেন্দ্র

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

গ্রীষ্মে বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা মেটাতে উৎপাদনে আসছে আরো ৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। তরল জ্বালানি নিভর ওসব বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৮৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। গেল বছর গ্রীষ্মে বিদ্যুত সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে ওসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয়। তার মধ্যে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে সরকারি কোম্পানি আর ৬টি কেন্দ্র নির্মাণ করছে বেসরকারী উদ্যোক্তারা। আগামী মে এবং জুনে সবগুলো কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, তরল জ্বালানি ফার্নেস অয়েল চালিত ৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এলে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পাশাপাশি ওসব এলাকার লোভোল্টেজ সমস্যারও সমাধান হবে। এবার গ্রীষ্মে ওই কেন্দ্রগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলে লোডশেডিং কম হবে বলেও বিদ্যুৎ বিভাগ আশাবাদী। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে আগামী মে মাসে উৎপাদনে আসবে সরকারী দুই কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রগুলো হচ্ছে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (এনডব্লিউপিজিসিএল) ১০০ মেগাওয়াট একটি কেন্দ্র। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা বাগেরহাটে ওই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষের পথে। তাছাড়া রুরাল পাওয়ার কোম্পানি (আরপিসিএল) গাজীপুরে নির্মাণ করছে অন্য কেন্দ্রটি। ওই কেন্দ্রটিও আগামী মে মাসে উৎপাদনে আসবে।
সূত্র জানায়, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের নির্মাণ করা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগই নির্মাণ করা হচ্ছে চট্টগ্রাম এলাকায়। তার মধ্যে ইউনাইটেড পাওয়ার আনোয়ারাতে-৩০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র নির্মাণ করছে। ওই কেন্দ্রটিও আগামী মে মাসে উৎপাদনে আসবে। তাছাড়া শিকলবাহাতে নির্মাণ করা হচ্ছে ১০৫ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। বারাকা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। পটিয়াতে জডিয়াক পাওয়ার কোম্পানি চিটাগং নির্মাণ করছে ৫৪ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র। উত্তরাঞ্চলের বগুড়া এবং রংপুরে কনফিডেন্স পাওয়ার নির্মাণ করবে দুটি কেন্দ্র। প্রতিটি কেন্দ্র ১১৩ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। ওই ৪টি কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে আগামী জুনে। দেশের উত্তরাঞ্চলে রংপুর এবং রাজশাহীতে লোভোল্টেজের সমস্যা রয়েছে। কোন কারণে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কেন্দ্র বন্ধ থাকলে ন্যাশনাল গ্রিড থেকে যতোই বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি করা হোক ওই এলাকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নত হয় না। সেজন্য সরকার চেষ্টা করছে ওই এলাকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধানের জন্য সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানির সঙ্কটে গ্যাস বা কয়লা চালিত কেন্দ্র সেখানে নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র আরো জানায়, বড়পুকুরিয়া ছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলে কোন কয়লাখনি উৎপাদন শুরু করেনি। আর কয়লা আমদানি করে সঙ্কট মেটানোর মতো অবকাঠামোও নেই। আর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি যে পরিমাণ কয়লা উৎপাদন করে তা দিয়ে পিডিবির কেন্দ্রের চাহিদাই পূরণ হয় না। তাছাড়া ওই এলাকাতে গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহও নেই। ফলে ওই এলাকার সমস্যা সামাধানে তেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণেই বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) উত্তরের জেলা সৈয়দপুরে আরো একটি ১০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র নির্মাণ করছে।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মতে, বড়পুকুরিয়া কোলমাইন কোম্পানি দীঘিপাড়া কয়লা খনি উন্নয়নের কাজ করছে। এখন সম্ভাব্যতা জরিপ চলছে। ওই সম্ভাব্যতা জরিপ শেষে উন্নয়ন কাজ শুরু হতেও কম করে আরো ৫ বছর সময় প্রয়োজন হবে। আর ওই খনিতে কয়লা উত্তোলন শুরু হলে সেখানে কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা যেতে পারে। তবে সেখানে কয়লা না পাওয়া গেলে বিকল্প চিন্তা করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ মেয়াদে শুধুমাত্র তরল জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো কঠিন হবে। সেক্ষেত্র প্রতিবেশী দেশের কোন এলএনজি টার্মিনাল থেকে এলএনজি আমদানি করে কেন্দ্র নির্মাণের চিন্তা করা হচ্ছে। তাছাড়া ভারত থেকে উত্তরবঙ্গ হয়ে বিদ্যুৎ আমদানি করা গেলে ওই সঙ্কটের সমাধান সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ৯:০১:৩৯ ● ৬৯৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ