ঢাকা সাগরকন্যা অফিস ॥
বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের ব্যাংক হিসাব ও দুই প্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৩৯ হাজার ২৫৫টি শেয়ার জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতির দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় করা মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার এসব সম্পত্তি জব্দ করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।
মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন জানান, আফরোজা আব্বাসের নামে ঢাকা ব্যাংকে একটি সঞ্চয়ী হিসাবে সাত লাখ টাকা এবং একই ব্যাংকে বিও হিসাবের ৩৯ হাজার ২৫৫টি শেয়ার ও তার নামে ঢাকা টেলিফোন কোম্পানিতে থাকা এক লাখ শেয়ার জব্দ করা হয়েছে। আসামি ওইসব বিও হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব ও শেয়ারের সম্পত্তি হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত হওয়ার চেষ্টা করছেন, এ কারণে আদালতের নির্দেশে এসব সম্পত্তি অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
দুদকের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আফরোজা আব্বাসের নামে যে সম্পদের বর্ণনা পাওয়া গেছে তা আসলে তার স্বামী মির্জা আব্বাসের সহায়তায় ‘অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত’ সম্পদ। দুদকের অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে এজাহারে বলা হয়, আফরোজার নামে ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ৩৬৩ টাকার ‘অবৈধ’ সম্পদ পাওয়া গেছে। আয়কর নথিতে তিনি নিজেকে একজন হস্তশিল্প ব্যবসায়ী বললেও পাসপোর্টের তথ্যে বলা হয়েছে, তিনি একজন গৃহিনী, নিজের আয়ের কোনো বৈধ উৎস তার নেই। আফরোজা আব্বাস তার ‘অবৈধভাবে অর্জিত’ সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপন করে ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ দালিলিক প্রমাণবিহীন ‘ভুয়া’ ঋণ হিসেবে দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
এজাহারে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালের আগে মির্জা আব্বাসের ‘উল্লেখযোগ্য কোনো আয় ছিল না’। ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে ‘ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে’ তিনি টাকার মালিক হন। এসব অভিযোগে দুদক আইনের ২৭(১) ধারা, দন্ডবিধির ১০৯ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ১৩ ধারায় আব্বাস দম্পতির বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি এই মামলায় হাই কোর্ট থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন পান আব্বাস দম্পতি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্বাস ঢাকা-৮ আসনে এবং আফরোজা ঢাকা-৯ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া সম্পদের বিবরণীতে আব্বাস তার নামে ৫৬ কোটি ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৪৫৬ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য দিয়েছিলেন; বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ৪ কোটি ৭৫ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯৯ টাকা। আর আফরোজা ৩৫ কোটি ৬৭ লাখ ৯৭ হাজার ৮৫৩ টাকার সম্পদের তথ্য দিয়ে হলফনামায় বলেছেন, তার আয় বছরে ১০ লাখ ২৪ হাজার ৬৯০ টাকা।
এফএন/কেএস