নোয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি ॥
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামে ঘরে সিঁধ কেটে তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে (২৯) গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তিন আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এদিকে, রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় দাবি করে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন ভিকটিম। মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত আবদুর রব মান্না, হারুন অর রশিদ ও মো. সেলিমকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলী আদালতে হাজির করা হলে বিচারক নবনিতা গুহ শুনানি শেষে তাদের প্রত্যেকের ৪দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জেলা ডিবি পুলিশের ওসি আবুল খায়ের জানান, মান্না, সেলিম ও হারুনকে ৭দিন করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের ৪দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। নির্যাতিতা গৃহবধূ জানান, আসামি জাকির হোসেন জহির মনগড়া জবানবন্দি দিয়ে তার নিরপরাধী আত্মীয়দের গ্রেফতার করিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে তারা কেউই জড়িত নয় ও তাদের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। ঘটনার সময় ওদের কাউকে তিনি দেখেনি বলেও জানান। মঙ্গলবার মামলার বাদীর পরে আইনজীবী রবিউল হাসান পলাশ আদালতে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন আসামি জাকির হোসেন জহির উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদীনির পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য ঘটনায় বাদীনির দেবর আবদুর রব মান্না, মামা হারুন অর রশিদ ও জেঠাতো ভাই মো. সেলিমকে জড়িয়েছে।
আবেদনে এ মামলা থেকে ওই ব্যক্তিদের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে। এদিকে ঘটনার পরের দিন দুপুরে গ্রেফতারকৃত জাকির হোসেন জহিরের দেওয়া প্রাথমিক তথ্যমতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নির্যাতিতা ওই নারীর দেবরসহ নিকটতম ৩ আত্মীয়কে গ্রেফতার করে। পরে জহির গত রবিবার ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। জহির তার জবানবন্দিতে জানায় এ ঘটনার মূলপরিকল্পনাকারী ভিকটিমের দেবর আবদুর রব হোসেন ওরফে মান্না। তারা দু’জন ছাড়াও ঘটনার সঙ্গে মো. সেলিম, হারুন অর রশিদ ও জামাল উদ্দিন জড়িত ছিল।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জহিরের নেতৃত্বে কয়েকজন সিঁধ কেটে ঘরে ঢোকে। এদের মধ্যে কয়েকজন মুখোশ পরা ছিল। এ সময় ওই গৃহবধূর কাছে ৬০ হাজার টাকা আছে এবং সেগুলো দিতে বলে। এ নিয়ে ভিকটিমের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে তারা ঘরের বৈদ্যুতিক লাইট বন্ধ করে ভিকটিমের মা, ভিকটিমের এক ছেলে ও দুই মেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পালাক্রমে ভিকটিমকে গণধর্ষণ করে। পরে রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ধর্ষকরা ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
এ সময় তারা ঘরে থাকা নগদ টাকা, ২ ভরি স্বর্ণ, মোবাইল ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। শনিবার দুপুরে ভিকটিমকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে জাকির হোসেন জহিরসহ অজ্ঞাত ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
এফএন/কেএস