ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রত্যক্ষ বিরোধিতাকারী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংস্কারপন্থীদের একটি অংশ ‘মুক্তিযুদ্ধকে মেনে’ নিয়ে নতুন যে রাজনৈতিক উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছে সেটি পর্যবেক্ষণ করছে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ শনিবার (২৭ এপ্রিল) এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামি তাদের খোলস পাল্টিয়ে যে নামেই আসুক, মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য এ দেশে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। সকালে ‘ধর্মভিত্তিক রাজনৈদিক দল’ জামায়াত থেকে সদ্য বহিষ্কৃত ও ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু নতুন এই রাজনৈতিক উদ্যোগের ঘোষণা দেন। তিনিসহ এই মঞ্চের উদ্যোক্তারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের ‘গর্বিত রাজনৈতিক উত্তরাধিকার’ হিসেবে দাবি করেন। স্বাধীনতার প্রায় পাঁচ দশকের মাথায় দাঁড়িয়ে ‘যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের সংগঠন’ জামায়াত ইসলামি থেকে বেরিয়ে আসা এই সংস্কারপন্থী নেতারা, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের’ দায়ে জড়িতদের বিচারও দাবি করেছেন।
উদ্যোক্তারা বলেন, তাঁরা কোনো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠন করবেন না। তাদের উদ্যোগ হবে ‘জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য, উন্মুক্ত একটি প্ল্যাটফর্ম। এর পরই রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে জামায়াতের সংস্কারপন্থী নেতাদের উদ্যোগ নিয়ে মাহবুব-উল-আলম হানিফের কাছে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামি ১৯৭১ সালে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল, সে অপরাধের কারণেই তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো নৈতিক অধিকার থাকতে পারে না, সেটা যে নামেই হোক। তারা খোলস পাল্টিয়ে কোনো নাম দিয়েও যদি রাজনীতি করতে চায়, তাও আমি মনে করি, তাদের নৈতিক অধিকার থাকতে পারে না। তবে জামাতের উদ্যোগকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
শনিবার ছিল শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে তাঁর সমাধিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হানিফ। সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নিয়ে জনগণের রায়ের প্রতি অবজ্ঞা করছেন। আওয়ামী লীগের এ শীর্ষ নেতা আরো বলেন, মির্জা ফখরুলের উচিত তাঁদের এলাকার যে জনগণ তাঁকে ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন, সেই ভোটারদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে, তাঁদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সংসদে শপথ নেওয়া। বিএনপি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সঙ্গে শপথগ্রহণ নিয়ে আওয়ামী লীগের কারোর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান হানিফ।
এফএন/এমআর