থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ’র মৃত্যু

প্রথম পাতা » গণমাধ্যম » থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ’র মৃত্যু
শনিবার ● ২৭ এপ্রিল ২০১৯


থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ’র মৃত্যু

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ আর নেই। বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের চিকিৎসকরা শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে নুসরাত হুমায়রা। গুরুতর অসুস্থ হয়ে বিগত তিন সপ্তাহ ধরে ব্যাংককের হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন মাহফুজউল্লাহ।
বিগত ২১ এপ্রিল তার মৃত্যুর খবরও ছড়িয়েছিল, কিন্তু মেয়ে নুসরাত তখন জানিয়েছিলেন, তার বাবা বেঁচে আছেন। নুসরাত শনিবার থাইল্যান্ড থেকে বলেন, স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় মাহফুজউল্লাহর মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ৬৯ বছর বয়সী মাহফুজউল্লাহ ২ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। স্কয়ারে কয়েকদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ১১ এপ্রিল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককে নিয়ে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তিনি হৃদরোগ, কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।
এর আগে ব্যাংককে একবার তার বাইপাস সার্জারিও হয়েছিল। মাহফুজউল্লাহর বড় ভাই অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ জানান, রাত সাড়ে ১২টায় ব্যাংকক থেকে তার ভাইয়ের লাশ দেশে আসবে। রোববার জোহরের নামাজের পর ঢাকার গ্রীন রোডের জামে মসজিদে এবংপর এরপর জাতীয় প্রেস ক্লাবে জানাজা হবে। এরপর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরাস্থানে মাহফুজউল্লাহকে দাফনের প্রস্তুতির কথা জানান মাহবুবউল্লাহ।
মাহফুজউল্লাহর মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোক জানিয়েছেন। মাহফুজউল্লাহর জন্ম ১৯৫০ সালে নোয়াখালীতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী হিসেবে ঊনসত্তরের ১১ দফা আন্দোলনে অংশ নেন মাহফুজউল্লাহ। আইয়ুব খানের শাসনামলে তাকে ঢাকা কলেজ থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। তিনি পরে ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন) সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রাবস্থাতেই মাহফুজউল্লাহ সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশের একসময়ের জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রার ১৯৭২ সালে জন্মলগ্ন থেকেই তিনি জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন তিনি। পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতায় তার অবদান রয়েছে। মাহফুজউল্লাহ মাঝে চীনে বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে খ-কালীন শিক্ষকতা করেছেন তিনি। তিনি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলেন।
এ ছাড়া টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত দেখা যেত তাকে। বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা মাহফুজউল্লাহর বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। তার সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- প্রেসিডেন্ট জিয়া অব বাংলাদেশ: আ পলিটিক্যাল বায়োগ্রাফি, যাদুর লাউ, যে কথা বলতে চাই, অভ্যুত্থানের ঊনসত্তর, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন: গৌরবের দিনলিপি (১৯৫২-৭১), উলফা অ্যান্ড দ্য ইনসারজেন্সি ইন আসাম, বেগম খালেদা জিয়া: হার লাইফ হার স্টোরি, স্বাধীনতার প্রথম দশকে বাংলাদেশ।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:১২:৩৫ ● ৪৬৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ