ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
দেশের গ্রামাঞ্চলে অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র বাড়ি তৈরি করা যাবে না। কারণ তাতে নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি। ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে খাদ্য নিরাপত্তা। সেজন্য একটি পরিবারের জন্য একটি বাড়ি না করে, একটি বাড়িতে যদি ১০টি পরিবারের আবাসনের ব্যবস্থা করা যায় তবে অনেক জমি বেঁচে যাবে। ওই কারণে সরকার পরিকল্পিতভাবে আবাসনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণকে উৎসাহিত করছে। সেজন্য গ্রামাঞ্চলে বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সহজ শর্তে গৃহনির্মাণ ঋণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন ২০১৯ এর খসড়ায় এ ধরনের প্রণোদনার কথা বলা হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মতামত নিতে সম্প্রতি আইনের খসড়াটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের আয়তন কম কিন্তু জনসংখ্যা অত্যধিক। এই কম আয়তনের মধ্যে অধিক জনসংখ্যার বাসস্থান নিশ্চিত করতে হলে পরিকল্পিত আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য পল্লী জনপদে বহুতল ভবন নির্মাণে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। শুধু তাই নয়, যে কোনো শিল্প-কারখানা, সরকারি-বেসরকারি অফিস ভবন এবং অন্যান্য স্থাপনার ক্ষেত্রেও সরকার ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণকে উৎসাহিত করছে। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হাউসবিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন শহর এলাকায় গৃহ নির্মাণে ঋণ দিচ্ছে। জায়গার মালিকানা নিশ্চিত করে কেউ যদি গ্রামাঞ্চলে বহুতল ভবন করতে চায় তবে সেক্ষেত্রে সহজ শর্তে একই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
সূত্র জানায়, কৃষিজমি সুরক্ষায় নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কৃষিজমি নষ্ট করে আবাসন, বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা, ইটের ভাটা বা অন্য কোনো স্থাপনা কোনোভাবেই নির্মাণ করা যাবে না। তবে অকৃষি জমিতে আবাসন, বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা প্রভৃতি স্থাপন করা যাবে। বাংলাদেশের কৃষিজমির ওপর শুধু কৃষক ও কৃষিজীবীর অধিকার থাকবে। এমন কি দেশের সব খাস কৃষিজমি কেবল ভূমিহীনরা পাওয়ার এবং ভোগদখল করার অধিকারী হবেন। খাস কৃষিজমি কৃষিকাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কৃষি খাসজমি ভূমিহীন ছাড়া অন্য কাউকে বন্দোবস্ত দেয়া হলে তা বাতিল করা হবে। তাছাড়া কৃষিজমি বাঁচাতে সরকার পরিবেশের জন্য ক্ষতি করে এমন ধরনের সব কমকা- বন্ধ করতে যাচ্ছে। সেজন্য নিষেধাজ্ঞা আসছে কৃষিজমিতে চিংড়ি চাষেও। নিষেধাজ্ঞা আসছে তামাক চাষ ও ইউক্যালিপটাসজাতীয় বৃক্ষরোপণেও। কারণ আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো কৃষিজমি চিংড়ি মহাল হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না এবং সরকার ঘোষিত নীতিমালা মোতাবেক চিংড়ি মহালের এলাকা অন্যান্য এলাকায় চিংড়ি চাষ করা যাবে না। এই অঞ্চলের আবহাওয়ার অনুকূল নয় এমন কোনো গাছ যেমন ইউক্যালিপটাস লাগানো যাবে না। পাশাপাশি কৃষি জমিতে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ফসলের (যেমন- তামাক) উৎপাদন করা যাবে না। আর ক্ষতিকর ফসল সময় সময় সরকার কর্তৃক গেজেট দ্বারা প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নির্দিষ্ট করার খসড়া আইনে কথাও বলা হয়েছে।
এফএন/এমআর