আমতলী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়া বাজারের সড়ক দখল করে অবৈধভাবে করাতকল স্থাপন করেছেন বাবুল সরদার ও খালেক সরদার। এতে চরম ভোগান্তিতে পরেছে দুই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ। দ্রুত সড়ক থেকে অবৈধ করাতকল অপসারনের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া বাজারে ১৯৬৫ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জমি অধিগ্রহন করে তিন ব্যান্ডের স্লুইজগেট নির্মাণ করে। ওই স্লুইজের দুই পাড়ে মানুষ চলাচলের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সড়ক নির্মাণ করে। ওই সড়ক দিয়ে কুকুয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। ২০০০ সালে সড়কের ওপরে বাবুল সরকার ও খালেক সরদার অবৈধভাবে করাতকল গড়ে তোলে। ওই সময় স্থানীয় লোকজন সড়ক দখল করে করাতকল নির্মাণে বাঁধা দেয়। তারা স্থানীয় লোকজনের বাঁধা এবং সরকারের কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে করাতকল চালিয়ে যাচ্ছেন। সড়ক দখল করে করাতকল গড়ে তোলায় ওই সড়ক দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। করাতকল মালিক সড়কের উপরে বড় বড় গাছে গুড়ি ফেলে রাখে। অনেক সময় ওই গাছের গুড়ি সরিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হয়। মানুষ ও যানবাহন চলাচলে বিগ্ন সৃষ্টি করে করাতকল চালানোর বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয় স্থানীয়রা । কিন্তু প্রশাসন অজ্ঞাত কারনে এ করাতকল মালিকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরঞ্চ তারা সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বীর দর্পে করাতকল চালিয়ে যাচ্ছেন। করাতকল মালিক সড়কের উপরে কাঠ চেরাই করে ফেলে রাখে। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পরেছে কুকুয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ। সড়কে বড় গাছের গুড়ি, চেরাই কাঠ ও কাঠের গুড়ি ফেলে রাখায় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। দ্রুত সড়ক থেকে করাতকল অপসারন করে মানুষ ও যাববাহন চলাচলের পথ সুগম করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বন আইনের ৭ ধারায় উল্লেখ আছে জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিঘœ সৃষ্টি করে এইরুপ কোন স্থানের নূন্যতম ২০০ মিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন করা বা পরিচালনা করা যাইবে না। কোন ব্যাক্তি এই বিধিমালার কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অন্যূন দুই মাস বা অনধিক তিন বছর কারাদন্ড এবং উহার অতিরিক্ত নূন্যতম দুই হাজার টাকা হইতে সর্বোচ্চ দশ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
করাতকল মালিক বাবুল সরকার ও খালেক সরদার এই আইনের প্রতি কোন তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছা মাফিক করাতকল স্থাপন করে জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের বিঘœ সৃষ্টি করেছেন।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, সড়ক দখল করে করাতকল স্থাপন করা হয়েছে। সড়কের ওপরে বড় বড় গাছের গুড়ি, চেরাই কাঠ ও কাঠের গুড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। সড়কের অধিকাংশ স্থান জুড়ে রয়েছে বড়বড় গাছের গুড়ি।
আমড়াগাছিয়া বাজারের সালেহা বেগম, সুমা আক্তার, বাদল সরকার, আনোয়ার ফকির ও কামাল সরদার বলেন, এ সড়ক দিয়ে কুকুয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ চলাচল করে। ওই সড়ক দখল করে করাতকল নির্মাণ করায় মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তারা আরো বলেন, দ্রুত এ করাতকল অপসারন করে মানুষের চলাচলের জন্য সড়ক উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবী জানই।
করাতকল মালিক বাবুল সরদার সড়কে বড় গাছের গুড়ি ফেলে রাখার কথা স্বীকার করে বলেন, করাতকলের বৈধকাগজপত্র আছে কিনা তা আমি জানিনা। আমার বাবা এ করাতকল গড়ে তুলেছেন। তিনি আরো বলেন সড়কের ওপর গাছ রাখা আমার ভুল হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই সড়ক থেকে গাছ সরিয়ে ফেলব।
আমতলী উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ সাইদুর রহমান আকন বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে খোজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।