বাউফলে শুরু হয়েছে পরীক্ষা বাণিজ্য, কর্তৃপক্ষের দ্বিমূখী বক্তব্য
প্রথম পাতা »
লিড নিউজ »
বাউফলে শুরু হয়েছে পরীক্ষা বাণিজ্য, কর্তৃপক্ষের দ্বিমূখী বক্তব্য
বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০১৯
বাউফল (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাউফলের বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ত্রৈমাসিক পরীক্ষা। শ্রেণি ভেদে পরীক্ষার ফি বাবদ নেয়া হচ্ছে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এনিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম বৃদ্ধি করা এবং শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পরীক্ষার চাপ কমানোর জন্য সরকার প্রায় ৬ বছর পূর্বে বছরে দুটি পরীক্ষা নেয়ার জন্য প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু বাউফলের মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সেই নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে ত্রৈমাসিক পরীক্ষা নিচ্ছেন। পরীক্ষা নেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নানাবিধ কৌশল নিচ্ছেন। কোন কোন বিদ্যালয়ে দু’একটি শ্রেণির ক্লাশ খোলা রাখা হচ্ছে অপরদিকে কয়েকটি ক্লাশের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাও নেয়া হচ্ছে। পরীক্ষার জন্য শ্রেণিভেদে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন নামে ফি নেয়া হচ্ছে। এই টাকার বিপরীতে কোন রশিদও দেয়া হচ্ছেনা। একাধিক অভিভাবক জানান, সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বিভিন্ন কৌশলে পরীক্ষা নেয়ার নামে মোটা অংকের বাণিজ্য করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রশাসনের চোখের সামনেই এগুলো ঘটছে। প্রতি বছরই এরকম করা হলেও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। সন্তানদের প্রতি শিক্ষকদের রুক্ষ দৃষ্টি পড়ার ভয়ে কোন অভিভাবক প্রতিবাদও করতে পারছেন না। পরীক্ষার বিষয়ে বাউফল সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. নার্গিস আক্তার জাহান বলেন, পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আমরা নিজেরা প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছি। তবে আমরা ১০০ মার্কের পরীক্ষা নিচ্ছিনা। আমাদের ক্লাশও চলছে। শীঘ্রই রমজানের ছুটি হবে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ভাটা পরবে তাই এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফি সংক্রান্ত ব্যপারে তিনি বলেন, যে টাকা আদায় করা হয়েছে পরবর্তীতে সেটা সমন্বয় করে দেয়া হবে। এটা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারও জানেন। একই কথা জানিয়েছেন কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মূ. হারুন অর রশিদ। বিভিন্ন কৌশলে স্কুলগুলো নির্ধারিত টাকা নিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছে একথা স্বীকার করে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কে.এম.সোহেল রানা বলেন, ইউএনও’ স্যারের নির্দেশনায় আমরা পরীক্ষা বন্ধসহ শিক্ষার্থীদের থেকে ফি বাবদ নেয়া টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ক্লাশ খোলা রাখা হয়েছে। সত্তর থেকে আশি নম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নিচ্ছে এটা জানি। তবে পরীক্ষা নেয়া বেআইনী সেটাও তিনি বলেন। তিনি বলেন, আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে জানাবো।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে জানান, পরীক্ষা বন্ধ করা এবং আদায়কৃত টাকা ফেরত দেয়ার জন্য স্কুলগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোন ভাবেই ক্লাশ বন্ধ করা যাবে না। বেলা ২ টার পর যদি শিক্ষার্থীরা আগ্রহী থাকেন তবে শিক্ষকরা মূল্যায়ণ পরীক্ষা নিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে কোন ফি নেয়া যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৭:৫১ ●
৪৮৬ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)