ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের মধ্যেও লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিক পক্ষ। তারা অভিযোগ করেছে, শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে আলোচনায় আসছে না। ১১ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) প্রথম প্রহর থেকে ধর্মঘট শুরু করায় সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সকালে ঢাকার সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। অনেকেই ঘাটে এসে কোনো লঞ্চ না পেয়ে বিপাকে পড়েন। বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক দিনেশ কুমার সাহা বলেন, সকালে সদরঘাটে অনেক যাত্রী এসেছিল। কিন্তু লঞ্চ না চলায় তারা ফিরে যান। তবে দুপুরে যাত্রীবাহী লঞ্চের মালিকরা তাদের নৌযান চালানোর সিদ্ধান্ত জানান।
এরপর সদরঘাট পন্টুনে ভিড়তে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি লঞ্চ। বিআইডব্লিউটিএ পরিদর্শক দিনেশ বলেন, শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেনি। তবে কিছু লঞ্চ পন্টুনে ভিড়েছে।
বরগুনা, হাতিয়া, বেতুয়া, বোরহান উদ্দিন, বরিশাল, ঝালকাঠি রুটের এমভি জাহিদ ৮, রনধূত, ফারহান ৩, ৬, ১০ ও ১২ রাশেদ ১, টিপু ৭ লঞ্চগুলো পন্টুনে দেখা গেছে। এমভি টিপু-৭ এর মহাব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, বিকাল সোয়া ৫টা থেকে সদরঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যাবে। ধর্মঘটের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা (শ্রমিকরা) তো দাবি নিয়ে মালিক বা সরকারের কাছে বসছে না।
সোমবার শ্রম পরিদপ্তরে মিটিং হয়েছে, সেখানেও তারা উপস্থিত ছিল না। মালিকদের এই অবস্থানেও ধর্মঘটে অটল থাকার কথা জানান মিতালী লঞ্চের মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের ধর্মঘট চলছে। এখন কিছু মালিক লস্কর ও ডকে পড়ে থাকা বেকার মাস্টার দিয়ে লঞ্চ চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এখন দেখা যাক কী হয়? আর পন্টুনে লঞ্চ ভিড়লেই তো হবে না, ছেড়ে যাওয়ার মতো যাত্রীও তো পেতে হবে। সরকার নির্ধারিত কাঠামোয় মালিকরা বেতন না দেওয়ায় এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
মোস্তাফিজুর বলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বেতন মালিকরা আমাদের এখনও দিচ্ছে না। আমাদের কোনো ইনক্রিমেন্ট নেই, নেই কোনো নিরাপত্তা। তাই এসব দাবিতে যাত্রীবাহী, মালবাহী, তেলবাহী সব ধরনের নৌযান চলাচল আমরা বন্ধ রেখেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা লঞ্চ চালাব না। শ্রমিকদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- যাত্রীবাহী লঞ্চের কর্মীদের জন্য ২০১৬ সালের ঘোষিত বেতন কাঠামোর পূর্ণ বাস্তবায়ন, সব শ্রমিকদের ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা অথবা খাদ্যভাতা দেওয়া, কর্মস্থল কিংবা দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে শ্রমিকদের ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া, প্রত্যেক নৌশ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র দেওয়া, মাস্টার পরীক্ষার সনদ দেওয়া ও নবায়নে অনিয়ম বন্ধ, বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি বন্ধ, নদীর নাব্যতা রক্ষা ও বয়া-বাতি স্থাপন ইত্যাদি।
এফএন/এমআর