ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির ‘লড়াইয়ের’ প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ১৯ মার্চ জয়দেবপুরে আর্মির অস্ত্র কেড়ে নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে লড়াই করেছিলাম। ঢাকায় মিছিল হয়েছিল ‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। আজকে ৭২ বছর বয়সে আমাকেই সেই কাজ করতে বলেন? না আপনাদেরও দায়িত্ব আছে। তারপরও বলছি, আছি আপনাদের সঙ্গে। শুধু সঙ্গে না, আপনাদের সামনেই থাকবো। চলেন আমরা একসঙ্গে নামি।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে ‘জিয়া আদর্শ একাডেমি’ আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়া ও হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ সব কারাবন্দি নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আজম খান।
এসময় নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। তিনি ভীষণ অসুস্থ। তাকে যদি মুক্ত আলো-বাতাসে আনা না যায়, যদি তার সঠিক চিকিৎসা করা না যায়, তাকে আমরা হারাবো। আর তাকে হারালে আপনার আমার কার কত দাম সেটা আমাদের জানা আছে। তাই তার আন্দোলনের সঙ্গী হাবিব উন নবী খান সোহেলের মতো যারা বন্দি আছেন, তাদের মুক্ত করার জন্য যে লড়াই প্রয়োজন, আসুন সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেই।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকারকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা স্বৈরাচারী বলে চিহ্নিত করেছে। আমরা যে শহরে বাস করি, সেটা দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর। অথচ সরকার দাবি করে উন্নয়ন হচ্ছে। কার উন্নয়ন হচ্ছে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে যারা সবচেয়ে ধনবান লোক, তারা যে গতিতে আরও ধনী হচ্ছে, সেটা বিশ্বের মধ্যে প্রথম, বাংলাদেশ এক নম্বরে। যে দেশে ধনীরা আরও অনেক দ্রুত ধনী হচ্ছে, আর গরীবরা আরও দ্রুত গরীব হচ্ছে, এইতো বাংলাদেশ। এটাইতো আমাদের উন্নয়নের ধরন। কিছু লোক ধনী হচ্ছে, তাদের কাছে টাকা আছে, তারা সরকারকে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে। সরকার সেই টাকা দিয়ে বিভিন্ন এজেন্সিকে আমাদের বিরুদ্ধে কাজে লাগায়।
বিশ্বের কোনো স্বৈরাচারী সরকার জনগণের আন্দোলনের মধ্যে টিকে থাকতে পারেনি উল্লেখ করে নজরুল বলেন, ফিলিপাইনে মার্কোসের দমননীতির বিরুদ্ধে জনগণ যখন রাজপথে ট্যাংকের সামনে শুয়ে পড়েছিল, তখনই মার্কোসের পতন হয়েছিল। ওই পরিমাণ সাহস কি আপনাদের আছে? মুখে আছে, যেদিন কাজে দেখাতে পারবেন, সেদিন এই সরকারের পতন হবে।
দলীয় নেতাকর্মীরা ঘরের মধ্যে যে রকম জ¦ালাময়ী বক্তব্য দেন, তা বাইরে দেখানোর আহ্বান জানিয়ে এই শ্রমিক নেতা বলেন, আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য যেকোনো আন্দোলনের প্রতি আমারও আগ্রহ আছে। আপনারা মুখে যেমন বলেন, কাজে দয়া করে তেমন দেখান। দেখবেন অনেক বড় আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যবস্থা হবে। সেটা না করা পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম জোরদার হবে না।
প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল খালেক, কৃষক দল নেতা মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু প্রমুখ।
এফএন/এমআর