নুসরাত হত্যার মূল সন্দেহভাজন নুর ও কাউন্সিলর মকসুদ গ্রেফতার

প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » নুসরাত হত্যার মূল সন্দেহভাজন নুর ও কাউন্সিলর মকসুদ গ্রেফতার
শুক্রবার ● ১২ এপ্রিল ২০১৯


নুসরাত হত্যার মূল সন্দেহভাজন নুর ও কাউন্সিলর মকসুদ গ্রেফতার

ফেণী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥


ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির শরীরে আগুন দেওয়ার অভিযোগে ‘মূল সন্দেহভাজন’ নুর উদ্দিন ও হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ থেকে নুরকে গ্রেফতার করা হয় বলে ফেনীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহ আলম জানিয়েছেন। অন্যদিকে, পিবিআই ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান শুক্রবার সকালে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহায়তায় কাউন্সিলর মকসুদকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নুসরাতের শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ উদ দৌলা মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক নুর উদ্দিন। তিনি চরচান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা। নুসরাত হত্যা মামলার এজাহারে তিনি দুই নম্বর আসামি।
মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় মামলা করেছিলেন নুসরাতের মা। এ মামলায় ২৭ মার্চ গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ সিরাজ। পরদিনই নুরের নেতৃত্বে গড়ে তোলা হয় সিরাজ উদ দৌলা মুক্তি পরিষদ। একই দিন দুপুরে করা হয় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ। সেখানে নুসরাতের পক্ষে অবস্থান নেওয়াদের হুমকি দিয়েছিলেন নুর। নুসরাতের ভাই নোমানের দাবি, নুরই তার বোনের প্রধান হত্যাকারী।
সিরাজ-উদ-দৌলার এমপিও স্থগিত: নুসরাত জাহান রাফির মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দৌলার এমপিও স্থগিতের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তার পাশাপাশি ওই মাদ্রাসার অন্য এক শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করতেও বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। চিঠিতে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ উদদৌলা (ইনডেক্স-৩০৪১১১) এবং ইংরেজির প্রভাষক আফসার উদ্দিনের (ইনডেক্স-২০৩০৫০৮) এমপিও স্থগিত করতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানী মামলা নং-২৪, তারিখ ২৭/০৩/২০১৯ এবং হত্যা মামলা নং-১০, তারিখ ০৮/০৪/২০১৯ সোনাগাজী থানার প্রেক্ষিতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক গ্রেফতার হওয়ায় তাদের এমপিও স্থগিত হওয়া প্রয়োজন। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এই দুই শিক্ষকের এমপিও স্থগিতের ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অনুরোধ জানিয়েছেন। রেওয়াজ অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এখন এই দুই শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করে আদেশ জারি করবে।
নুসরাতের পরিবারের করা শ্লীলতাহানির মামলায় গ্রেফতার হয়ে এখন বন্দি রয়েছেন শিক্ষক সিরাজ। ওই মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হলেও নুসরাত রাজি না হওয়ায় ৬ এপ্রিল তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পাঁচ দিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকা নুসরাত বুধবার মারা যান। তিনি সোনাগাজীর উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মাওলানা এস এম মুসার মেয়ে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে নুসরাত তৃতীয়।  ফেনীর সোনাগাজীর মেয়ে নুসরাত এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী ছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজকে সাময়িক বরথাস্ত করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:১৬:৩৬ ● ৪৮৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ