আমতলীতে ২০টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ, ঝুঁকিতে চার হাজার শিক্ষার্থী

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে ২০টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ, ঝুঁকিতে চার হাজার শিক্ষার্থী
বৃহস্পতিবার ● ১১ এপ্রিল ২০১৯


আমতলীতে ২০টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ, ঝুঁকিতে চার হাজার শিক্ষার্থী

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনার আমতলী উপজেলার ২০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে চার হাজার শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছে। এতে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। পরপর দুটি বিদ্যালয়ে ছাদের বিম ধসে পড়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে। সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে সাহস পাচ্ছে না অভিভাবকরা।
আমতলী প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় ১৫২ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত ও ২০ টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ। এ জরাজীর্ণ ভবনগুলো ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। শ্রেনী কক্ষ সঙ্কটের কারনে জরাজীর্ণ ভবনগুলোতেই চলছে পাঠদান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চার হাজার শিক্ষার্থী জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান ৭টি বিদ্যালয় ভবনকে পরিত্যক্ত ও ২০ টি বিদ্যালয়কে জরাজীর্ণ ভবন ঘোষনা করেছেন। পরিত্যক্ত ভবনগুলোর পাশে টিনশেটের ঘর করে পাঠদান করাচ্ছে। পরিত্যক্ত ভবনগুলো হলো গাজীপুর বন্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জেবি সেনের হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আড়পাঙ্গাশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাওড়া লোদা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব চরকগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণপূর্ব গুলিশাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত ১ এপ্রিল  পরিত্যাক্ত ভবনগুলো অপসারনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান দরপত্র আহবান শেষে কার্যাদেশ দিয়েছেন। জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো হলো, উত্তর সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব চন্দ্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম আমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব তারিকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব তক্তাবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , উত্তর পশ্চিম চিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ ঘোপখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব তারিকাটা এসটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চাউলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম ঘটখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর গোজখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুনা বোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুকুয়া হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চলাভাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভায়লাবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খোন্তাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
শিক্ষক ও অভিভাবকের অভিযোগ নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মাণ করায় অল্প দিনের মধ্যে ভবনগুলো ভগ্ন দশায় পরিনত হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নে ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনগুলোর ছাদের পলেস্তারা খসে পরেছে। রড বেড়িয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ছে। কক্ষের ভেতরের দেয়ালে ফাটল রয়েছে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে।
৫৫ নং পশ্চিম আমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী ইবাদ, আবদুর রব, আমেনা ও রবিউল, জাহিদুল, ইশান ও নাবিয়া জানান, প্রতিদিন ভবনের পলেস্তার খসে পরছে। ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পরছে।এ জরাজীর্ণ ভবনে ক্লাস করার সময়ে আতঙ্কে থাকতে হয়, কখন আবার ছাদের পলেস্তারা ভেঙ্গে মাথায় পড়ে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দ্রুত নতুন ভবনের দাবী জানিয়েছে।
আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ ফখরুল শাহ আল আমিন বলেন, ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ঠাসাঠাসি করে পাঠদান করাতে হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আমার কাছে কোন জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা দেয়নি।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদানের কথা স্বীকার করে বলেন ,জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা করে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে জমা দিয়েছি। তিনি আরো বলেন,৭টি পরিত্যক্ত বিদ্যালয়ের ভবন অপসারনের জন্য দরপত্র আহবান শেষে কার্যাদেশ দিয়েছি। যারা ভবন অপসারনের কাজ পেয়েছে তারা দ্রুত কাজ শুরু করবেন।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫২:১৩ ● ৪৮৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ