কুয়াকাটায় সাগর থেকে পাঁচ লাখ ইয়াবা জব্দ, ট্রলারসহ দুই হোতা গ্রেফতার

প্রথম পাতা » কুয়াকাটা » কুয়াকাটায় সাগর থেকে পাঁচ লাখ ইয়াবা জব্দ, ট্রলারসহ দুই হোতা গ্রেফতার
বুধবার ● ১০ এপ্রিল ২০১৯


কোস্টগার্ডের অভিযানে পাঁচ লাখ ইয়াবাসহ আটক দুই হোতা ও উদ্ধার হওয়া ১৩ জেলে—সাগরকন্যা

কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
কুয়াকাটা সংলগ্ন ৪৫ কিলোমিটার গভীর বঙ্গোপসাগরে কোস্টগার্ডের অভিযানে পাঁচ লাখ ইয়াবার বিশাল চালান আটক হয়েছে। কোস্টগার্ড নিজামপুর, পায়রা বন্দর ও ভোলা  জোনের সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে ইয়াবার এ বিশাল চালান আটক করতে সক্ষম হয়েছে। এসময় দুই হোতা মোশাররফ সিকদার (৫০) ও তার চাচাতো ভাই টিপু সিকদারকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়। এদের বাড়ি কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া গ্রামে। আটক করা হয় দু’টি ট্রলার। এছাড়াও ইয়াবা বহনকারী নষ্ট ট্রলার উদ্ধারকাজে অস্ত্রের কাছে জিম্মি করে নেয়া ট্রলারসহ ১৩ সাধারণ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া জেলেরা হচ্ছে রাসেল, ফেরদৌস, জসিম, বাদল, কবির, আলাউদ্দিন, ইলিয়াস, সোহাগ, ইব্রাহীম প্যাদা, তামিম, মিজান, চানমিয়া, কামাল।
বুধবার সকাল ১০টায় কোস্টগার্ডের স্টাফ অফিসার (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম নাজিউর রহমান নিজামপুর কোস্টগার্ড বিসিজি স্টেশনে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং এ আরও বলেন, গোপন সুত্রের ভিত্তিতে এ পরিমান ইয়াবা জব্দ করতে সক্ষম হয়েছেন। এসময় মূল হোতা মহিপুরের আলআমিন, জহিরুল, সালাহউদ্দিন, বেল্লাল, ছোহরাব পালিয়ে যায়। এসময় লেঃ মোজাদ্দেদ হাসান, কন্টিজেন কমান্ডার মোঃ এনামুল হক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাইদুল ইসলাম, এবি যথাক্রমে আঃ রাজ্জাক, মোঃ শাকিল, মোঃ সুজন ও মোঃ জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন। আটককৃত মোশাররফ আরও জানায়, জানায়, টেকনাফ থেকে এই পরিমান ইয়াবা ট্রলারে লোড করা হয়। যা কুয়াকাটা, মহিপুর-আলীপুর ও কলাপাড়ায় আনলোড করার কথা ছিল। ট্রলারটির ইয়াবা রবিবারই খালাশ করার কথা ছিল। কিন্তু ইয়াবা বহনকারী ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এতে চালানকারীরা কিছুটা বেদিশা হয়ে পড়ে। মোশাররফ তখন মহিপুর এসে সুগন্ধা বরফকল সংলগ্ন এলাকায় ভেড়ানো এফবি আলাউদ্দিন ট্রলারের ১৩ জেলেকে নষ্ট হওয়া ট্রলার কিনারে আনার জন্য মোটা অংকের টাকার লোভ দেখায়। কিন্তু ট্রলার নিয়ে ইয়াবা বহনকারী ট্রলারের কাছে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জেলেদের মারধর করতে থাকে। এক পর্যায় নষ্ট ট্রলার বেধে ফেয়ার বয়ার দিকে চালাতে বাধ্য করে। কুয়াকাটা সয়ংলগ্ন গভীর সাগরে থাকা অবস্থায় কোস্টগার্ড ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে ট্রলার চরে আটকে দিয়ে মূল হোতা আলআমিনসহ ছয়জন পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মহিপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ইয়াবার চালানের হোতা আলআমিনের বাবার নাম আব্দুস সালাম। বাড়ি মহিপুরে। আলীপুরের জনৈক কোম্পানির লোকজনও এ চালানোর সঙ্গে জড়িত বলে উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানিয়েছে। বর্তমানে ইয়াবার বিশাল চালান আটকের খবরে এলাকায় মানুষের মাঝে নানা শঙ্কার কথা আলোচিত হচ্ছে। কোস্টগার্ডের ভাষ্য, কক্সবাজার ও টেকনাফে পুলিশ, র‌্যাব, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ডের কঠোর অভিযানে এরুটকে ব্যবহার করছে ইয়াবার কারবারিরা। বর্তমানে এ ব্যবসার সঙ্গে এক শ্রেণির মৎস্যজীবী জড়িয়ে পড়ছে। যাদের শণাক্তের কাজ চলছে বলেও কোস্টগার্ডসুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সম্প্রতিকালে কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের সলিমপুরে শেখ কামাল সেতুর টোলপয়েন্টের কাছে ছয় লাখ ৭৭ হাজার পিস ইয়াবা আটকের পরে পাঁচ লাখ ইয়াবার চালান আটকে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩১:৪৫ ● ২৫২২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ