কুয়াকাটা সাগরকন্যা অফিস॥

বেরিবাঁধ বিধস্ত পটুয়াখালীর মহিপুরের নিজামপুর এলাকার মানুষের চোখেমুখে এখন খুশীর ঝিলিক। চলতি মাসের মধ্যে শেষ হচ্ছে রিং বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ। অস্বাভিক জোয়ের পানিতে আর প্লাবিত হবেনা আবাদি জমি, বসতভিটা, পুকুর ঘের। মাঠ জুড়ে থাকবে সবুজের হাতছানি। উৎপাদিত হবে ফসল। দীর্ঘদিনের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার। আগামীর সম্ভাবনার এমন স্বপ্ন দেখছেন বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা জনপদ নিজামপুর, সুধীরপুর. পুরানমহিপুর, ইউসুফপুরসহ পাঁচটি গ্রামের ছয় শতাধিক কৃষক পরিবার।
স্থানীয়রা জানায়, ২০০৭ সালের সিডরের তান্ডবে বিধস্ত হয় নিজামপুরের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার বেরিবাঁধ। মানুষের দুর্ভোগসহ জীবকায়নকে গুরুত্ব দিয়ে জরুরী ভিত্তিতে বেশ কয়েকবার বাঁধ নির্মান করা হয়। কিন্তু সমুদ্র মোহনার এ গ্রামে সরাসরি সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে বিলীন হয়ে যায় সে বাঁধ। ফলে বর্ষাকালে জোয়ারের পানিতে ভাসে গ্রামের পর গ্রাম। ভাঁটায় নদীর পাড় পর্যন্ত শুকিয়ে গেলেও জোয়ারের পানি আটকে থাকে পাঁচটি গ্রামের নি¤œ এলাকা। ডুবে থাকে চাষাবাদের জমি। দীর্ঘ সময় ধরে চলমান এ সমস্যায় ব্যহত হয় কৃষিকাজ। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বর্ষা মৌসুমে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের পাঠ কার্যক্রম।
আন্দারমানিক নদীর পাড়ের দূর্ভাগা এসব গ্রামের কৃষকসহ সাধারন মানুষের সুবিধার্থে সরকার বিগত বছর শুরু করেছে রিং বেড়ি বাঁধ র্নিমানের কাজ। প্রতিক’ল আবহাওয়ার কারনে পুরো কাজ শেষ করতে পারেনি। তবে যতটুকু রিংবাঁধ করা হয়েছে তাতে প্রায় টানা চার বছর পরে নিজামপুর গ্রামের চাষীরা এ বছর ভাল আমন ফসল পেয়েছেন।
নিজামপুর গ্রামের কৃষক ফরিদ ফকির জানান, প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে বিগত বছর আমন মৌসুমে পনের বিঘা জমি চাষাবাদ করেছেন। ধান পেয়েছেন মাত্র সতের মন। অন্য সময়ে এই জমি চাষে তিনি পেয়েছেন প্রায় তিন’শ মণ ধান। সুধীরপুর গ্রামের কৃষক আলহাজ আবুল হাসেম হ্ওালাদার জানান, নিজ গ্রাম পানি বন্দী থাকায় অন্য গ্রামে বীজতলা তৈরি করতে হয়েছে। বাঁধ র্নিমানের ফলে এখন আর থাকবে না এ সমস্যা। সুধীরপুরের বাসিন্দা গনমাধ্যমকর্মী মহিপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনিরুল ইসলাম জানান, পলি জমে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে আমন ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছেন বাঁধ ভাঙ্গা পাঁচ গ্রামের কৃষক। আগামী দিনে ভাল ফলনের মাধ্যমে পুষিয়ে নিতে পারবেন তাদের ক্ষতি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসমাইল হ্ওালাদার জানান, বর্ষা মৌসুমে পানিতে গ্রামের পর গ্রাম ডুবে থাকায় জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেকেই হয়েছেন দেশান্তরী। রিং বেবিবাঁধ র্নিমানের সংবাদে সেসব মানুষ এখন আসতে শুরু করেছেন। শেফালী বেগম জানান, জোয়রের পানির ঝাপটায় তার ঘরটি নস্ট হয়ে গিয়েছিল। বাঁধ র্নিমানের ফলে এখন আর শংকা নেই। তাই তিনি নতুন একটি ঘর নির্নমান করেছেন। পুকরে মাছ ছেরেছেন । মহিপুর ইনিয়ানের সাবেক চেয়ার ম্যান ্ও কলাপাড়া উপজেলা আ্ওয়ামীলীগের যুগ্নসাধারন সম্পাদক আ: মালেকন জানান আষারমাস আশার আগে   নির্মাণ  করা বেড়িবাঁেধ ব্লক না দিলে ঢেউয়ের আঘাতে বিলীন হয়ে জাবে । পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, বিগত বছরে যেটুকু বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তা মেরামত করা হবে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই সমাপ্ত হবে বাধের র্নিমান কাজ।

এমই/এমআর